
কলকাতা: ‘যাত্রীগণ কৃপেয়া ধ্য়ায়ান দে…’, রেল স্টেশনে গেলেই এই ঘোষণাটা কানে আসে বার বার। কখনও আমাদের বলে দেয়, এটাই আপনার যাত্রার অন্তিম স্টেশন। কখনও বা আবার জানায়, কোন প্ল্যাটফর্মে রয়েছে আমাদের গন্তব্যে পৌঁছনোর ট্রেনটি। কখনও বাংলায়, কখনও বা হিন্দি, কখনও ইংরেজিতে। একাধিক ভাষায় ‘আটকে আটকে’ বললেও তা ঠিক বোধগম্য হয়।
কিন্তু এই গলাটা কার, সেটা কি কখনও ভেবেছেন? একটি প্রতিবেদন মারফৎ জানা গিয়েছে, এই গলাটা আসলে রেলওয়ের এক মহিলার কর্মীর। নাম সরলা চৌধুরী। বছর বছর ধরে ভারতীয় রেলেই ঘোষণা করার কাজ করেছেন তিনি। পরবর্তীতে তাঁর গলাকে যান্ত্রিক প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের প্রতিটি স্টেশনে ছড়িয়ে দিয়েছে ভারতীয় রেল।
কিন্তু কীভাবে এই চাকরি পেলেন তিনি?
জানা যায়, অন্যান্য় সকল চাকরিপ্রার্থীর মতো রেলে লোক নিচ্ছে শুনে পরীক্ষা দিতে হাজির হয়েছিলেন সরলা। তখন ১৯৮২ সাল। মূলত, স্টেশনে ট্রেনের ঘোষণা করার কাজের জন্য়ই সেই নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করেছিল ভারতীয় রেল। পরীক্ষা চলাকালীনই হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীর মধ্যে সরলার গলাই পছন্দ হয়ে যায় পরীক্ষকের। আর তারপর চলে আসে হাতে চাকরি।
এরপর বছরের বছর ধরে রেল স্টেশনে ট্রেনের যাওয়া-আসা থেকে শুরু করে সব ঘোষণার কাজ করতে শুরু করেন সরলা। জানা যায়, কর্মজীবনের প্রথমার্ধে মহারাষ্ট্রের পারলি ভাজিনাথ রেল স্টেশনে কাজ করতে তিনি। কিন্তু তাঁর গলার আওয়াজ এতটাই পছন্দ হয়ে যায় রেলের। ১৯৮৬ সালে সরলার কণ্ঠকে কম্পিউটার প্রযুক্তির মাধ্যমে রেকর্ড করে দেশের সমস্ত স্টেশন ছড়িয়ে দেওয়া হয়। তারপর থেকে এই প্রযুক্তির ব্যবহারেই নাকি যুগ যুগ ধরে মানুষের কানে কানে বয়ে চলেছে তাঁর কণ্ঠ।