নয়া দিল্লি: আর সময় নয়। আগামী সোমবার অর্থাৎ ২০ মার্চের মধ্যেই দিল্লিতে ইডি (ED) অফিসে হাজিরা দিতে হবে অনুব্রত-কন্যাকে (Sukanya Mondal)। অন্যথায় কড়া পদক্ষেপ করা হবে। শুক্রবার দুপুরে এমনই কড়া বার্তা দিয়ে নতুন নোটিস জারি করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। অর্থাৎ আর কোনভাবেই যে বাবার মুখোমুখি জেরা এড়াতে পারবেন না সুকন্যা মণ্ডল, তা ED-র এই নোটিসেই স্পষ্ট।
ED সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ২০ মার্চ দিল্লিতে তলব করা হয়েছিল সুকন্যা মণ্ডলকে (Anubrata Mondal’s Daughter)। কিন্তু, সেদিন যাওয়া সম্ভব হবে না জানিয়ে আরও ৭ দিন সময় চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন অনুব্রত-কন্যা। কিন্তু, তাঁর সেই আবেদন খারিজ করে দিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। এদিন দুপুরেই আরও একটি নতুন নোটিস জারি করেছে ED। সেই নোটিসে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, ‘আপনি সোমবারের (২০ মার্চ) মধ্যে দিল্লিতে ইডি অফিসে হাজিরা দিন। অন্যথায় কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’ সুকন্যার আইনজীবী মারফত এই নোটিস তাঁর কাছে পাঠানো হয়েছে বলে ইডি-র তরফে জানানো হয়েছে। এই নোটিসের পরেও সুকন্যা হাজিরা এড়ালে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ ইডি অন্য কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে পারে বলে সূত্রের খবর।
এদিকে, সুকন্যা মণ্ডলের নামে কোটি কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট নিয়ে অনুব্রতর অ্যাকাউন্ট্যান্ট মণীশ কোঠারি (Manish Kothati) বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি করেছেন বলে ইডি সূত্রে খবর। গোরু পাচারের টাকার সঙ্গে সুকন্যার এফডি-র যোগ থাকার অভিযোগ উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে সুকন্যা মণ্ডলকে দিল্লিতে হাজিরা দেওয়ার ব্যাপারে ইডি-র কড়া বার্তা বিশেষ তাৎপর্যমূলক। বাবা-মেয়েকে মুখোমুখি বসিয়ে গোয়েন্দারা সুকন্যার সম্পত্তির উৎস সম্পর্কে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করবেন বলে সূত্রের খবর। সেক্ষেত্রে অনুব্রত-কন্যা বিপাকে পড়তে পারেন বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
প্রসঙ্গত, অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে প্রথম হাজিরা এড়িয়ে গিয়েছেন সুকন্যা মণ্ডল। তারপর ২০ মার্চ তাঁকে দিল্লির ইডি দফতরে হাজিরা দেওয়ার নোটিস দেওয়া হয়। কিন্তু, সুকন্যা সেই হাজিরাও এড়িয়ে যেতে চেয়েছিলেন। আরও ৭ দিন সময় চেয়েছিলেন। এদিকে, আগামী ২১ মার্চ অনুব্রতর এবারের ইডি হেফাজত শেষ হচ্ছে। এরপর আবার অনুব্রতকে ইডি হেফাজতে পাবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছে। ফলে এবারের হাজিরা এড়াতে পারলে বাবার মুখোমুখি বসিয়ে তাঁকে জেরা করার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে যাবে এবং অসুস্থতার কথা বলে হাজিরা এড়াতে তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগও ইডি আনতে পারতেন না। এই সমস্ত দিক ভাবনা-চিন্তা করেই সুকন্যা হাজিরা এড়াতে চেয়েছিলেন বলে সূত্রের খবর। কিন্তু, ইডি-র হাত থেকে যে এত সহজে নিস্তার নেই, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা যে পাল্টা ঘুঁটি সাজাচ্ছেন, তা এদিনের নতুন নোটিস জারির ঘটনাতেই স্পষ্ট। ফলে এবার সুকন্যা দিল্লি যাবেন কি না সেটাই দেখার!
এদিকে, অনুব্রত মণ্ডলের রাঁধুনি বিজয় রজকও ইতিমধ্যে দিল্লিতে ইডি দফতরে হাজিরা দিয়েছেন। রাঁধুনির কাজ করে কী ভাবে তাঁর বিপুল সম্পত্তি হল, সে বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন গোয়েন্দারা।