
নয়া দিল্লি: প্রায় এক সপ্তাহ ধরে অন্ধকারে ডুবে আছে দিল্লির বসন্তকুঞ্জের জয় হিন্দ কলোনি। অভিযোগ, গত কয়েকদিন আগে হঠাৎ ওই বস্তি এলাকার সব বাড়ির বিদ্যুৎ কেটে দিয়ে গিয়েছে প্রশাসন। আদালতের নির্দেশ কার্যকর করা হয়েছে বলেই যুক্তি প্রশাসনের। অপরদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, বাঙালি বলেই টার্গেট করা হচ্ছে হতদরিদ্র মানুষজনকে।
সেই এলাকায় গিয়ে যে ছবি দেখা গেল, তাকে আক্ষরিক অর্থেই বলা যায় ‘নরক কুণ্ড’। রাজধানীর কোনও কোণে যে এমন এলাকা আছে তা আন্দাজ করাও কার্যত অসম্ভব। কাজায় মাখামাখি রাস্তা পেরিয়ে গাড়ি নিয়ে পৌঁছনোই রীতিমতো দুষ্কর। দু’পাশে জঞ্জালের স্তুপে কাজ করছে মানুষ। এটাই তাদের পেশা। জঞ্জাল কুড়নোই কাজ। জমা জল, কাদা মাটির রাস্তা, চরম অস্বাস্থ্যকর পরিবেশই এখানকার পরিচিত ছবি।
দিল্লি নির্বাচনের ঠিক আগে এই এলাকাতেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাংলাদেশি খুঁজেছিল দিল্লি পুলিশ। আধার কার্ড, ভোটার কার্ড দেখেও ক্ষান্ত হয়নি তারা। কারও কারও আদিবাড়ি কোচবিহারে দিল্লি পুলিশের বিশেষ টিম গিয়ে সরেজমিনে পরিচয় যাচাই করে আসে। তারপর বাকি দিল্লিবাসীর মতো এরাও ভোট দিয়েছে দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে। আর এবার আরও বিপত্তি। বিনা নোটিসে হঠাৎ করেই জয় হিন্দ কলোনির অধিকাংশ বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
স্থানীয় মানুষজন বলছেন, ২০১৪ সালে একবার আগুন লেগে গিয়েছিল এই বস্তিতে। তখনও দিল্লির ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার। সেই সময় আগুন নেভানোর পর প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছিল, পাকা বসতি গড়ে তোলা হবে। আশায় বুক বেঁধেছিলেন জয় হিন্দ কলোনির এই ৫০০০ বাঙালি। কিন্তু ১১ বছর পরও তারা সেই একই আঁধারে। রাজনীতির আকচা আকচি চলছে। পথে নামছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই ঘুরে এসেছে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। পাল্টা তোপ দাগছেন রাজ্য বিধানসভার শুভেন্দু অধিকারীও। কিন্তু এই জল হিন্দ কলোনির বাসিন্দাদের পরিস্থিতি পাল্টাচ্ছে না।