Delhi High Court: ‘বউকে দিয়ে স্বামী ঘরের কাজ করালে তা নিষ্ঠুরতা নয়, কিন্তু বউ যদি এই কাজ করে…’

Delhi High Court: পারিবারিক আদালতের রায়কে হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন স্বামী। সেই আবেদনের ভিত্তিতে হওয়া মামলার শুনানিতে বিচারপতি সুরেশ কুমার কাইত এবং বিচারপতি নীনা বনসল কৃষ্ণের ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, কোনও বিবাহিত মহিলাকে গৃহস্থালির কাজ করতে বলা মানে, তাঁকে দিয়ে গৃহকর্মীর কাজ করানো নয়।

Delhi High Court: বউকে দিয়ে স্বামী ঘরের কাজ করালে তা নিষ্ঠুরতা নয়, কিন্তু বউ যদি এই কাজ করে...
প্রতীকী ছবিImage Credit source: TV9 Bangla

Mar 07, 2024 | 5:27 PM

নয়া দিল্লি: স্ত্রী গৃহস্থালির কাজ করবেন, এমনটা আশা করতেই পারেন স্বামী। একে নিষ্ঠুরতা বলা যায় না। বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ), এক বিবাহ বিচ্ছেদের মামলার শুনানির সময় এমনটাই পর্যবেক্ষণ করল দিল্লি হাইকোর্ট। স্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘নিষ্ঠুরতা’র অভিযোগ এনে, স্বামী বিচ্ছেদ চেয়েছিলেন। কিন্তু, পারিবারিক আদালত তাঁর আবেদন মানেনি। পারিবারিক আদালতের রায়কে হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন স্বামী। সেই আবেদনের ভিত্তিতে হওয়া মামলার শুনানিতে বিচারপতি সুরেশ কুমার কাইত এবং বিচারপতি নীনা বনসল কৃষ্ণের ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, কোনও বিবাহিত মহিলাকে গৃহস্থালির কাজ করতে বলা মানে, তাঁকে দিয়ে গৃহকর্মীর কাজ করানো নয়। এই ক্ষেত্রে মহিলা তাঁর পরিবারের প্রতি ভালবাসা এবং স্নেহ থেকেই ওই কাজ করবেন বলে প্রত্যাশা করা হয়।

আদালত আরও বলেছে, বিবাহের উদ্দেশ্য হল ভবিষ্যতের দায়িত্বগুলি ভাগ করে নেওয়া। তাই, কোনও স্বামী যদি আশা করেন, তাঁর স্ত্রী ঘরের কাজ করবেন, তাতে কোনও নিষ্ঠুরতার প্রশ্ন নেই। বিচারপতি সুরেশ কাইত বলেন, “সাধারণত, স্বামী আর্থিক বাধ্যবাধকতা গ্রহণ করেন এবং স্ত্রী সংসার চালানোর দায়িত্ব গ্রহণ করে। বর্তমান মামলাটিও এমনই। আবেদনকারী (স্বামী) যদি উত্তরদাতার (স্ত্রী) কাছ থেকে গৃহস্থালির কাজ আশা করে থাকেন, তবে তাকে নিষ্ঠুরতা বলা যায় না।”

জানা গিয়েছে, আবেদনকারী অর্থাৎ স্বামী একজন সিআইএসএফ জওয়ান। তাঁর অভিযোগ, স্ত্রী গৃহস্থালির কোনও কাজ করতেন না। তিনি শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে স্ত্রী মিথ্যা ফৌজদারি মামলা করেছে বলেও অভিযোগ করেছেন ওই সিআইএসএফ জওয়ান। তাঁর আরও দাবি, তাঁর স্ত্রী এবং স্ত্রীয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁকে চাপ দেওয়া হয়েছিল। যার জন্য, তিনি পৈত্রিক বাড়ি ত্যাগ করে স্ত্রীকে নিয়ে থেকে আলাদা থাকতে বাধ্য হয়েছিলেন। এই সকল কারণেই ‘মনকষ্টে’ তিনি বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করেছেন।

তাঁর এই আবেদনের প্রেক্ষিতে, দিল্লি হাইকোর্ট জানিয়েছে, স্বামীকে তাঁর পরিবারের থেকে আলাদা থাকতে বলে স্ত্রী এই ক্ষেত্রে নিষ্ঠুরতার পরিচয় দিয়েছেন। বিচারপতি কাইত বলেন, “বয়স্ক বাবা-মা, যাদের আয়ের কোনও উৎস নেই বা আয় নগণ্য, তাদের দেখভাল করাটা যে কোনও ছেলের কাছে নৈতিক ও আইনি বাধ্যবাধকতার বিষয়। বিবাহের পর, ছেলেদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়াটা হিন্দু সংস্কৃতি অনুযায়ী কাঙ্খিত নয়।” আদালত জানিয়েছে, একদিকে, স্ত্রী শ্বশুরবাড়িতে থাকতে চাননি। তার উপর, তিনি প্রায়শই তাঁর বাপের বাড়ি চলে যেতেন। ২০১০ সাল থেকে তাঁরা আলাদা থাকেন। স্ত্রীর যৌথ পরিবারে থাকার কোন ইচ্ছা নেই। স্বামী আলাদা থাকার ব্যবস্থা করে, স্ত্রীকে সুখে রাখার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু, স্ত্রী বারবার বাপের বাড়ি চলে গিয়ে তাঁর বৈবাহিক কর্তব্য পালন করেননি। উপরন্ত স্বামীকে সন্তানের থেকে দূরে রেখে তাঁকে পিতৃত্ব থেকেও বঞ্চিত করেছেন। তাই, এই দম্পতির বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়াই উপযুক্ত।