তামিলনাড়ু : সংবিধান অনুযায়ী, কে কোন ধর্ম পালন করবেন, তা বেছে নেওয়ার অধিকার প্রত্যেকের আছে। কিন্তু জোর করে ধর্মান্তরণ করা কখনও উচিত নয়। অথচ একাধিক সরকারি স্কুলে ধর্মান্তরণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে তামিলনাড়ুতে। কেন এ ব্যাপারে সরকারের তরফে কোনও নির্দেশিকা বা গাইডলাইন তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে না? তামিলনাড়ু সরকারকে সেই প্রশ্নই করেছে মাদ্রাস হাই কোর্ট। মাদ্রাস হাই কোর্টে বিচারপতি আর মহাদেবন ও বিচারপতি এস অনন্তীর ডিভিশন বেঞ্চে চলছে সেই মামলার শুনানি। ধর্মান্তরণের অভিযোগ তুলে আদালতে আবেদন করেছেন আইনজীবী বি জগন্নাথ। তাঁর দাবি, শিক্ষা দফতরের এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট গাইডলাইন তৈরি করা উচিত। পাশাপাশি, এই ধরনের কাজ যাতে বন্ধ করা হয়, তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আর্জিও জানিয়েছেন তিনি।
আবেদনকারী উল্লেখ করেছেন যাতে এই ধরনের কাজের ক্ষেত্রে অভিযোগ জানানোর জন্য একটি আভ্যন্তরীণ কমিটি তৈরি করা হয়। জেলা স্তরে সেই কমিটি তৈরি করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। সেই কমিটির সদস্যরা ‘ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং’ বা সত্য অনুসন্ধানকারী হিসেবে কাজ করবে। কালেকটরের কাছে জমা পড়বে সেই রিপোর্ট। পাশাপাশি, এই অভিযোগে আদালতের হস্তক্ষেপ যে প্রয়োজন সে কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি। বিভিন্ন সরকারি স্কুলগুলোতে একটি চক্র এই কাজ করছে বলে অভিযোগ করে তিনি জানিয়েছেন নির্মূল করতে হবে সেই চক্র। আর একজনও শিশু যাতে এই ধর্মান্তরণের ফাঁদে পড়ে না যায়, তার জন্য দ্রুত নির্দেশিকা তৈরির আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
আবেদনকারীর দাবি, মূলত হিন্দু ছাত্রীদের নিশানা করা হচ্ছে ক্রিশ্চান মিশনারিগুলোতে। ওই সব ছাত্রীরা নানা ধরনের হেনস্থার শিকার হচ্ছে বলেও আদালতে জানিয়েছেন ওই আইনজীবী। তাঁর দাবি, শাসক দল এ সব জেনেও চুপ করে আছে। ওই সব পড়ুয়াদের জন্য কোনও ব্যবস্থাই নিচ্ছে না।
আবেদনকারীর বক্তব্য শোনার পর অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল জে রবিচন্দ্রন প্রশ্ন করেন, কিসের ভিত্তিতে এই অভিযোগ করা হচ্ছে। তিনি দাবি করেন, কোনও ভিত্তি ছাড়াই এই অভিযোগ করা হচ্ছে। তিনি আদালতে জানান, স্কুলে ধর্মান্তরণ বন্ধ করতে কড়া পদক্ষেপ করেছে সরকার। কন্যাকুমারী ও তিরুপুরে পরপর দুটি এই ধরনের ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি এখন আর কোনও ধর্মান্তরণের ঘটনা ঘটছে না, আর ঘটলেই ব্যবস্থা নেবে সরকার। দু পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদালত প্রশ্ন করেছে, গাইডলাইন তৈরি করলে ক্ষতি কী? আগামী ৬ মে পর্যন্ত মামলা স্থগিত রাখা হয়েছে।