নয়া দিল্লি: সোমবার (১৭ অক্টোবর), ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত সিনিয়র আইএএস অফিসার জিতেন্দ্র নারায়ণকে সাসপেন্ড করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের মুখ্য সচিব ছিলেন তিনি। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটির এক ২১ বছরের তরুণী অভিযোগ করেছেন, প্রাক্তন মুখ্য সচিব এবং শ্রম কমিশনার আরএল ঋষি মিলে তাঁকে গণধর্ষণ করেছিল। তরুণীর দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে, চলতি মাসের শুরুতেই একটি মামলা নথিভুক্ত করেছিল আন্দামান পুলিশ। এই ঘটনার তদন্তের জন্য, একটি বিশেষ তদন্তকারী দলও গঠন করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “গত ১৬ অক্টোবর, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের তৎকালীন মুখ্য সচিব, আইএএস জিতেন্দ্র নারাইন এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে এক মহিলার যৌন নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়ে আন্দামান ও নিকোবর পুলিশের কাছ থেকে একটি প্রতিবেদন পেয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। রিপোর্টে জিতেন্দ্র নারাইনের পক্ষে গুরুতর অসদাচরণ এবং সরকারি পদের অপব্যবহারের সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। আইন অনুযায়ী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট অফিসারের বিরুদ্ধে অবিলম্বে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই নির্দেশ অনুযায়ী, জিতেন্দ্র নারাইনকে অবিলম্বে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
গত ২১ অগস্ট এই অভিযোগ করেছিলেন ওই তরুণী। সেখানে তিনি অভিযোগ করেছেন, গত এপ্রিল এবং মে মাসে, দুইবার তাঁকে জিতেন্দ্র নারাইনের সরকারি বাসভবনে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করা হয়েছিল। মহিলার দাবি, চাকরির খোঁজ করছিলেন তিনি। এক হোটেল মালিকের মাধ্যমে শ্রম কমিশনার আরএল ঋষির সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। তিনিই তাঁকে নারাইনের বাসভবনে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁকে মদ্যপানের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেছেন ওই মহিলা। সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন তিনি। এরপর তাঁকে সরকারি চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ওই দুই সরকারি পদাধিকারী তাঁকে নির্মমভাবে যৌন নির্যাতন করে।
দুই সপ্তাহ পর, ওই মহিলাকে ফের মুখ্য সচিবের বাসভবন থেকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। ওই দিন ফের যৌন নির্যাতনের পুনরাবৃত্তি করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন ওই মহিলা। তাঁর দবি, প্রতিশ্রুত সরকারি চাকরি দেওয়ার বদলে, ধর্ষণের ঘটনা কাউকে না জানানোর জন্য চাপ দেওয়া হয় তাঁকে। বিষয়টি কাউকে জানালে তাঁর ভয়ানক পরিণতি হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। এই অবস্থায় অভিযোগকারী মুখ্য সচিবের বাসভবনের সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণের আবেদন করেছেন। মুখ্যসচিবের বাসভবনে উপস্থিত কর্মচারীদের জেরা করার দাবিও জানিয়েছেন তিনি। প্রধান মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে, ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারার অধীনে তাঁর বিবৃতি নথিভুক্ত করিয়েছেন। এই ধারায় নথিভুক্ত করা বিবৃতি মিথ্যা প্রমাণিত হলে তার জন্য শাস্তি পেতে হয়।