আহমেদাবাদ : গুজরাটে বিষমদ খেয়ে মৃতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। এখনও পর্যন্ত মারা গিয়েছেন ৪২ জন। এখনও প্রায় ৯৭ জন ভাবনগর, বোটাদ ও আহমেদাবাদের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়ে গিয়েছে। এই ঘটনায় গুজরাটের স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে বৃহস্পতিবার বোটাদ ও আহমেদাবাদের পুলিশ সুপারিনটেনডেন্টকে বদলি করা হয়েছে। এবং বরখাস্ত করা হয়েছে আরও ৬ জন পুলিশ আধিকারিককে।
এই ঘটনার সূত্রপাত রবিবার। গুজরাটের বোটাদ জেলায় বিষমদ খেয়ে সেদিন শুরু হয় মৃত্যু মিছিল। হাসপাতালে সঙ্কটজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন ছিলেন অসংখ্য। সময় যত এগিয়েছে মৃতের সংখ্যা বেড়েছে। এখন তা দাঁড়িয়েছে ৪২। এখনও ৯৭ জন হাসাপাতালে ভর্তি রয়েছে বলে জানিয়েছেন গুজরাটের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হার্ষ সাংভি। এদিকে তদন্তে নেমে গুজরাটের মতো ‘ড্রাই স্টেটে’ মদের আবির্ভাবের রহস্য় উদঘাটন হয়েছে। জানা গিয়েছিল জয়েশ ওরফে রাজু নামের এক ব্যক্তি আহমেদাবাদের একটি গোডাউন থেকে ৬০০ লিটার মিথাইল অ্য়ালকোহল চুরি করে আনেন। পরে তাঁর এক ভাই সঞ্জয় মারফত বোটাদের অবৈধ ব্যবসায়ীদের হাতে সেগুলি যায়। সেই অবৈধ ব্যবসায়ীরা মিথাইল অ্য়ালকোহলের সঙ্গে জল মিশিয়ে মদ তৈরি করেন। এবং গ্রামবাসীদের কাছে তা প্রতি প্যাকেট ২০ টাকায় বিক্রি করেন।
এই বিষাক্ত মদ খেয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন ৪২ জন। এখনও হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন অনেকে। অন্যদিকে এই ঘটনায় তদন্তে নেমে এদিন ছয়জন পুলিশ আধিকারিককে বরখাস্ত করা হয়েছে। দুই পুলিশ সুপারিনটেনডেন্টকে বদলি করা হয়েছে। রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, ‘আমরা বোটাদের এসপি করণরাজ ভাঘেলা ও আহমেদাবাদের এসপি বীরেন্দ্রসিং যাদবকে বদলি করেছি। আরও ৬ পুলিশ আধিকারিককে বদলি করা হয়েছে। এর মধ্যে দু’জন ডেপুটি এসপিকে বরখাস্ত করা হয়েছে।’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আহমেদাবাদের ধোলকা ডিভিশনের ডেপুটি এসপি এন ভি প্যাটেল ও বোটাদের ডেপুটি এসপি এস কে ত্রিবেদী, আহমেদাবাদের ধানধুকা পুলিশ স্টেশনের ইনস্পেক্টর কে পি জাদেজা,ধানধুকা ডিভিশনের সার্কেল পুলিশ ইনস্পেক্টর এস বি চৌধুরী ও বোটাদের সাব-ইনস্পেক্টর বি জি ভালা ও শৈলেন্দ্র সিনহা রানাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে জারি করা বরখাস্ত পত্র থেকে জানা গিয়েছে, দায়িত্বে অবহেলার কারণে তাঁদের বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁরা প্রতিশ্রুতি পূরণেও ব্যর্থ হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। এবং তাঁরা নিজেদের এলাকায় বিষমদের পরিবহন, বিক্রি ও মদ্যপান বন্ধ করতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে বরখাস্তের নোটিস ধরানো হয়েছে তাঁদের হাতে।