Hajj GST Exemption: ‘বেসকারিভাবে হজ যাত্রার পরিষেবা নিতে গেলে দিতে হবে কর’, সুপ্রিম কোর্টে জানাল কেন্দ্র
Hajj GST Exemption: কোনও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের পরিষেবা দানের ক্ষেত্রে যে জিএসটি ছাড়ের সুবিধা পাওয়া যায়, তা বেসরকারি হজ আয়োজকদের পাওয়া উচিত নয়। সুপ্রিম কোর্টে জানালেন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এন ভেঙ্কটরামন।
নয়া দিল্লি: কোনও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের পরিষেবা দানের ক্ষেত্রে যে জিএসটি ছাড়ের সুবিধা পাওয়া যায়, তা বেসরকারি হজ আয়োজকদের পাওয়া উচিত নয়। কারণ হজ আয়োজকরা নিজেরা কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠান পরিচালনা করে না। বৃহস্পতিবার, সুপ্রিম কোর্টে সাফ জানালেন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এন ভেঙ্কটরমণ। হাজিদের উপর জিএসটি ধার্য করাকে চ্যালেঞ্জ করে বেসরকারি ট্যুর অপারেটররা বেশ কয়েকটি মামলার দায়ের করেছে। গত ৭ এপ্রিল থেকে সেই মামলাগুলির শুনানি চলছে সুপ্রিম কোর্টে। আবেদনকারীদের পক্ষে বিশিষ্ট আইনজীবী অরবিন্দ দাতার অবশ্য অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেলের এই যুক্তি মানতে চাননি। হজ আয়োজকদের দাবি, যেহেতু হজ পরিষেবা দেওয়া হয় দেশের বাইরে, তাই সংবিধানের ২৪৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী তার উপর ভারত সরকার কোনও কর ধার্য করতে পারে না। তারা আরও বলেছে, এই কর ধার্য করার বিষয়টি বৈষম্যমূলকও বটে। কারণ, হজ কমিটির সঙ্গে যারা হজ করতে যাচ্ছেন, তাদের এই করের আওতা থেকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। গত বুধবার আদালতে এই বিষয়ে আইনজীবী অরবিন্দ দাতার বলেন, হজের ক্ষেত্রে পরিষেবা দান করা হয় সৌদি আরবে। সেই ক্ষেত্রে ভারতে সরকারের কর ব্যবস্থার আওতায় এই পরিষেবা পড়ে না। আর যদি ধরেও নেওয়া হয় হজ পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে ভারতের মাটি থেকেই, সেই ক্ষেত্রেও এটি একটি ধর্মীয় পরিষেবা। তাই, এই পরিষেবা করের আওতার বাইরে থাকা উচিত।
আদালতে এর পাল্টা যুক্তি দেন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এন ভেঙ্কটরমণ। তিনি জানান, কর ছাড়ের সুবিধা পাওয়ার কথা যারা নিজেরা হজ করছেন, তাদেরই। হজযাত্রার আয়োজন করছেন যে বেসরকারি ট্যুর অপারেটররা, তারা নিজেরা সরাসরি হজ করছে না। তাই, তাদের কর ছাড় পাওয়ার প্রশ্ন ওঠে না। তিরুপতি মন্দিরে পুজো দেওয়ার উদাহরণ দিয়ে এন ভেঙ্কটরমণ বলেন, “তিরুপতি মন্দিরে যে কেউ গিয়ে পুজো দিতে পারেন। তিরুপতি মন্দির কর্তৃপক্ষ যে টিকিট বিক্রি করে, তার উপর কোনও জিএসটি বা কর লাগে না। কারণ, তারা একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান আয়োজন করছে। কিন্তু কেউ যদি কোনও বেসরকারি ট্যুর অপারেটরের মাধ্যমে তিরুপতি মন্দিরে গিয়ে পুজো দিতে চান, সেই ক্ষেত্রে ওই বেসরকারি ট্যুর অপারেটররা নিজেরা কোনও ধর্মীয অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে না। তীর্থযাত্রীদের মন্দির দর্শনে সহায়তা করছে। তাই, তাদের পরিষেবা করের আওতা থেকে বাদ যাবে না।”
হজযাত্রার ক্ষেত্রেও, কেন্দ্রীয় সংখ্য়ালঘু উন্নয়ন দফতরের আওতায় থাকা হজ কমিটির সঙ্গে যাঁরা হজ করতে যাবেন, তাঁদের কোনও জিএসটি বা অন্য কোনও কর দিতে হবে না। কিন্তু, যদি কেউ বেসরকারি হজ আয়োজকদের সঙ্গে গিয়ে উন্নত মানের পরিষেবা পেতে চান, সেই ক্ষেত্রে তাঁদের কর দিতেই হবে।
অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেলের এই যুক্তির জবাবে, আইনজীবী অরবিন্দ দাতার বলেন, “হজকে অন্যান্য ধর্মীয় যাত্রার সঙ্গে তুলনা করা যায় না। কারণ, যে কেউ ইচ্ছা করলেই হজযাত্রায় যেতে পারেন না। তার জন্য হাজিদের ভারত বা অন্য কোনও দেশের হজ গ্রুপ অর্গানাইজারদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয় । এই হজ গ্রুপ অর্গানাইজাররা সৌদি আরবের তাওয়াফা গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত। এই তাওয়াফা যে নির্দিষ্ট এজেন্ট নির্ধারণ করে দেয়, তার মাধ্যমেই হজ করা যায়। কাজেই বেসরকারি হজ আয়োজকরা ধর্মীয় অনুশীলনের পরিষেবাই দান করছে।” শেষ পর্যন্ত আদালত কোন যুক্তি গ্রহণ করে, সেটাই দেখার।