চণ্ডীগঢ়: সারাদিন হাড়ভাঙা খাটনির পর চোখে ঘুম নেমে এসেছিল শ্রমিকদের। কিন্তু ঠিকাদাররা তাঁদের থাকার কোনও ব্যবস্থা করেননি, সেই কারণেই রাস্তার ধারেই শুয়ে পড়েছিলেন শ্রমিকেরা। কিন্তু ওই রাস্তার ধারেই যে তাঁদের মৃত্যু অপেক্ষা করছে, তা ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি শ্রমিকেরা। গভীর ঘুমে যখন পরিযায়ী শ্রমিকেরা কাদা, সেই সময়ই দ্রুতগতিতে একটি ট্রাক তাঁদের চাপা দিয়ে চলে গেল। দুর্ঘটনায় ৩ জন পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে, গুরুতর আহত হয়েছেন ১১ জন। দুর্ঘটনাটি ঘটেছে হরিয়ানার ঝাজ্জরে। এদিন ভোররাতে ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারে শুয়ে থাকা শ্রমিকদের চাপা দেয় এবং তারপরে উল্টে যায়।
পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, হরিয়ানার অসোধা টোল প্লাজা থেকে দুই কিলোমিটার দূরে, কুণ্ডলী-মানেসর-পালওয়াল এক্সপ্রেসের উপরে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে। জানা গিয়েছে, প্রায় ১৮ জন শ্রমিক কাছেরই একটি নির্মাণ প্রকল্পে কাজ করছিল। কাজ শেষ করার পর গতকাল রাতে তারা রাস্তার ধারেই শুয়ে ছিল। এদিন ভোররাতে আচমকাই একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ওই শ্রমিকদের চাপা দেয় এবং উল্টে যায়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ আধিকারিক অমিত যশবর্ধন জানিয়েছেন, ট্রাকে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। ১২ জনকে কাজের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এদের মধ্যে ১০ জনকে রোহতকের পিজিআিএমএসে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, ঘটনাস্থলের কাছেই একটি ব্রিজ তৈরির কাজ চলছিল। ওই প্রকল্পেই কাজ করছিলেন শ্রমিকেরা। মৃতদের নাম এখনও জানা না গেলেও, তারা উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা বলেই জানা গিয়েছে। দুর্ঘটনার পরই ট্রাক চালক ঘটনাস্থল ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই ট্রাকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেখে মালিকের নাম খুঁজে বের করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, ট্রাকে দুইজন চালক ও একজন খালাসি ছিল। তাদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু করা হয়েছে।
দুর্ঘটনার সঠিক কারণ এখনও অবধি জানা না গেলেও, প্রাথমিক তদন্তের পর মনে করা হচ্ছে যে নিয়ন্ত্রণ হারিয়েই ট্রাকটি শ্রমিকদের চাপা দেয়। গাড়ির চালক মদ্যপ ছিলেন বা ঘুমিয়ে পড়েছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে, শ্রমিকেরা রাস্তার ধারে শুয়ে থাকলেও নিডেদের সুরক্ষিত রাখার জন্য ব্যারিকেড দিয়ে এলাকাটি ঘিরে রেখেছিল। ট্রাকটি ব্য়ারিকেড ভেঙেই তাদের চাপা দেয়।