চণ্ডীগড়: পঞ্জাব সফরে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়ে যেভাবে মাঝ রাস্তাতেই প্রায় আধ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী(Narendra Modi)-কে, তারপরই তার নিরাপত্তা ও পঞ্জাব পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্ট(Supreme Court)-র তরফেও বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরইমাঝে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর (manohar Lal khattar)। তিনি সরাসরি পঞ্জাব সরকারের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুললেন। তাঁর দাবি, পঞ্জাব সরকারই কৃষকদের রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখাতে বলেছিল।
সম্প্রতিই প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার গাফিলতি (PM’s Security Breach) নিয়ে স্টিং অপারেশন চালায় একটি সংবাদ মাধ্যম। সেই ভিডিয়োয় দেখা যায়, পঞ্জাব পুলিশের এক এসএইচও বলছেন যে, তাঁকে ইচ্ছাকৃতভাবেই প্রধানমন্ত্রীর যাত্রাপথে বাধা তৈরি করতে বলা হয়েছিল এবং সেই অনুযায়ীই সে রাস্তা আটকেছিল এবং ভিড় সামাল দিচ্ছিল।
এই ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পরই হরিয়ানা সরকারের তরফে বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, “পঞ্জাবের সিআইডি বিভাগের তরফেও সতর্ক করে বলা হয়েছিল, খারাপ আবহাওয়ার কারণে প্রধানমন্ত্রীর যাতায়াতের জন্য বিকল্প রাস্তার যেন ব্যবস্থা রাখা হয়।”
সরকারি বিবৃতিতে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ব্যবস্থা করা তো দূরের কথা, পঞ্জাব সরকার কৃষক নেতাদের স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিলেন কীভাবে প্রধানমন্ত্রীর যাওয়ার পথ আটকাতে হবে। এভাবে পথ আটকে তারা প্রধানমন্ত্রীকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছে।”
হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীর ছাড়াও রাজ্যের স্বাস্থ্য তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল ভিজও এর আগে পঞ্জাবের চন্নি সরকারকেই আক্রমণ করেছিলেন। ওই স্টিং অপারেশনের উল্লেখ করে তিনিও দাবি করেছিলেন, পঞ্জাব পুলিশের তরফে প্রধানমন্ত্রীর যাত্রাপথে অবরোধের কথা শীর্ষ মহলে জানানো হলেও, কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। তিনি বলেছিলেন, “জাতীয় স্তরের ওই সংবাদমাধ্যমের স্টিং অপারেশনে সাফ প্রমাণিত যে সিআইডি রিপোর্টে খারাপ আবহাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। সেই মতো বিকল্প রাস্তার ব্যবস্থাও তাই করা উচিত ছিল।”
প্রধানমন্ত্রীকে সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় পঞ্জাবে কংগ্রেস সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা এবং রাষ্ট্রপতি শাসনের অধীনে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন করার দাবিও জানিয়েছেন তিনি। স্টিং অপারেশন নিয়ে অনিল ভিজ বলেন, “সাধারণ মানুষের মনে এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই যে পঞ্জাব সরকারের চক্রান্তের জেরেই মাঝরাস্তায় আটকে পড়তে হয়েছিল প্রধানমন্ত্রীকে।”
এই প্রথম নয়, গত সপ্তাহে ঘটনাটি ঘটার পরই সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী। এর আগেও তিনি টুইট করে লিখেছিলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজীর জীবন ইচ্ছাকৃতভাবে বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল। এই ঘটনার কড়া সমালোচনা করছি।”
আগামিদিনে এই ধরনের ঘটনা এড়াতে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৈরি করা হয়েছে একটি তদন্তকারী কমিটি। কী কারণে নিরাপত্তায় ঘাটতি হল, ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা এড়াতে কী করা প্রয়োজন, সেই বিষয়গুলি খতিয়ে দেখবে ওই কমিটি। সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি ইন্দু মালহোত্রার নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি তৈরি করা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা বলেছে শীর্ষ আদালত।