
হরিয়ানা: গত দু’বছরে একই পরিবারে পর পর চার সন্তানের অস্বাভাবিক মৃত্যু! কারোর জলের গামলার থেকে দেহ উদ্ধার, কারোর আবার প্রতিবেশীর স্টোর রুমে। কারণ খুঁজে পাচ্ছিলেন না পরিবারের সদস্যরা, তদন্তে নেমে কোনও সূত্রও হাতে আসছিল না পুলিশের। কিন্তু এই তালিকায় সাম্প্রতিকতম সংযোজন অর্থাৎ চতুর্থ সন্তানের অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে যে তথ্য উঠে আসে, তা শিউরে ওঠার মতো। ‘কালপ্রিট’ বাড়ির বউ! কিন্তু কেন? কারণ পুলিশের দাবি, ওই মহিলা তাঁর রূপ নিয়ে ‘কমপ্লেক্সে’ ভুগতেন। তিনি চাইতেন না, পরিবারের আর কেউ তাঁর থেকে সুন্দরী হোক! আর সেই কারণেই পরবর্তী প্রজন্মের চার সন্তানকেই খুন করেছেন তিনি। এমনটাই পুলিশের দাবি। ঘটনাটি হরিয়ানার। নিজের ছেলে-সহ পরিবারের চার সন্তানকে খুন করার অভিযোগ ওই মহিলার বিরুদ্ধে।
পুনম হরিয়ানার এক প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা। বছর দুয়েক ধরে তাঁর শ্বশুরবাড়িতে তিন সন্তানের পর পর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। চতুর্থ জন বছর দুয়েকের মেয়ে বিধি! তার খুনের তদন্তে নেমে পুলিশ গ্রেফতার করে পুনমকে। অভিযোগ, বিধির মুখে কেটলি থেকে গরম চা ঢেকে দিয়েছিলেন পুনম। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই ঝলসে মৃত্যু।
পুনমকে জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যায়, এক বিধি নয়, বাড়ির বাকি তিন শিশুর অস্বাভাবিক মৃত্যুর পিছনেও তাঁরই হাত ছিল। আর তার কারণ সৌন্দর্য। তার মধ্যে তাঁর নিজের চার বছরের ছেলেও রয়েছে। বাকি তিন জনই মেয়ে। অভিযোগ, পরিবারের তিন কন্যা তাঁর থেকে দেখতে সুন্দর ছিল, তাই খুন।
পুলিশ সূত্রে দাবি, ২০২৩ সালে প্রথম খুন হয় ইশিকা। ৯ বছরের ইশিকা পুনমের ননদের মেয়ে ছিল। কিন্তু এই খুনের পর পরিবারের অনেকের তাঁর ওপর সন্দেহ হয়েছিল। আর সন্দেহ মেটাতে, পুলিশকে বিভ্রান্ত করতেই ২০২৩ সালেই নিজের চার বছরের ছেলেকেও খুন করেছিলেন পুনম। জেরায় তেমনটাই স্বীকার করেছেন তিনি। পুলিশের কথায়, আততায়ীর এই ধরনের চালাকিকে ‘রেড হেরিং’ বলে।
এরপর তৃতীয়, অর্থাৎ বাড়ির তিন নম্বর সন্তান আট বছরের জিয়া খুন হয়। কারণ সেই একই। জিয়ার দেহ উদ্ধার হয় বাড়ির একটি ঘর থেকেই। সিরিয়াল কিলিংয়ের সাম্প্রতিকতম সংযোজন অর্থাৎ পুনমের চতুর্থ ভিক্টিম ২ বছরের বিধি। পুনমের আত্মীয়ের বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল। বাড়ির সকলে যখন অনুষ্ঠানে ব্যস্ত ছিলেন, সেই সুযোগে বিধির বিশ্বাস অর্জন করে তাঁকে আত্মীয়ের বাড়ির স্টোর রুমে নিয়ে গিয়েছিলেন পুনম। অভিযোগ সেখানে জল ভর্তি গামলায় তাঁকে চুবিয়ে মারে। তারপরও তদন্ত নেমে পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে তখনও কোনও সূত্র আসছিল না। কিন্ত সে সময়ে বিধির বাবা পুলিশের একটি তথ্য দেন। এর আগে একবার তিনি পুনমকে দেখেছিলেন, বিধির মুখে কেটলি থেকে গরম চা ঢালা হয়েছিল। পুনম সে সময়ে বিধির বাবাকে বুঝিয়েছিলেন, এটা নিছকই দুর্ঘটনা। কিন্তু পুনমের ওপর সন্দেহ থেকে গিয়েছিল বিধির বাবার। এরপরই পুনমকে চলতি সপ্তাহে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। জেরার মুখে ভেঙে পড়েন পুনম। পুনমের ফাঁসি চাইছে পরিবার।