চণ্ডীগঢ়: নতুন বছরকে সকলেই অন্যভাবে স্বাগত জানিয়ে থাকেন। হই-হুল্লোড়, খাওয়া-দাওয়া, নাচ-গানের মাধ্যমে বর্ষবরণকে উদযাপন করেন অনেকেই। তবে ৫৫ বছর বয়সী কেহার সিংয়ের কাছে এই নববর্ষকে উদযাপন করার এক অন্যই কারণ রয়েছে। কারণ দীর্ঘ কয়েক বছর পর নিজের স্ত্রীয়ের দেখা পেলেন হরিয়ানার (Haryana) বাসিন্দা কেহার। গত বছরের শেষ দিনে কেহারের জন্য বাকি জীবনের সেরা উপহার দিয়ে গিয়েছে ২০২২। ৩১ ডিসেম্বর শনিবার পাশে পেয়েছেন ৯ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া স্ত্রীকে। বর্ষবরণের আকাশে যখন আলোর রোশনাই কেহারের চোখে তখন চিকচিক করছে। চোখের জল! না আনন্দাশ্রু। দীর্ঘ এত বছর পর নতুন বছর উদযাপনের একটা কারণ খুঁজে পেলেন কাহার।
এই দুই আত্মার পুনর্মিলনের নেপথ্যের গল্প বুনেছে কর্নাটকের একটি আশ্রয়কেন্দ্র। তাঁরা গত চার বছরে ধরে কাহারের ৫০ বছর বয়সী স্ত্রী দর্শিনীর খেয়াল রেখেছে। এবং হরিয়ানাতে তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে এই হোমই। শনিবার কোদাগুর থানাল হোমে তখন খুশির জোয়ার। তখন দীর্ঘ ৯ বছর পর স্ত্রী-র সঙ্গে চোখাচুখি হয়েছে কাহারের। এ যেন পুরো সিনেমার প্লট।
প্রসঙ্গত, হরিয়ানার রোহতক থেকে ২০১৩ সালে নিখোঁজ হন দর্শিনী দেবী। ২০১৮ সালে কোনওভাবে তিনি কর্নাটকে পৌঁছোন। সেখানে একটি হোমে থাকতেন তিনি। সেই হোম থেকেই কেহারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ততদিনে স্ত্রীকে ফিরে পাওয়ার জন্য খোঁজার হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন কেহার। তবে শেষে আশার বাতি নিভে গিয়েও দপ করে জ্বলে ওঠে কর্নাটকের হোমের খবরে। কেহার ও দর্শিনীর পাঁচ সন্তান রয়েছে। এদিকে দীর্ঘ ৯ বছর পর স্ত্রীকে দেখতে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন কেহার।
কেহার বলেছেন, “মানসিকভাবে অসুস্থ ছিল ও। দর্শিনী নিখোঁজ হয়ে যায় এবং আমরা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করি। পরিবারের অন্যদের সঙ্গে নিয়ে আমি উত্তর প্রদেশ, দিল্লি ও পঞ্জাবে ওর খোঁজ করেছিলাম। তারপর খোঁজার চেষ্টা ছেড়ে দিয়েছিলাম। মুস্তাফার থেকে ফোন পাওয়া আমার জীবনে অন্যতম বড় উপহার।” নতুন বছরে এ যেন এক নতুন জীবন শুরু হল কেহার-দর্শিনীর। রবিবারই তাঁরা হরিয়ানার উদ্দেশে বেঙ্গালুরু থেকে রওনা দেন। মুস্তাফা জানিয়েছেন, দর্শিনী কিছুটা সুস্থ হয়েছেন তবে এখনও তাঁর চিকিৎসা দরকার। তিনি বলেছেন, “দীর্ঘ সময় পর নিজের স্বামীকে দেখতে পেয়ে খুব খুশি হয়েছেন দর্শিনীও।”