
আজাদ হিন্দ ফৌজের হাত ধরে নেতাজি যখন দেশ স্বাধীন করার স্বপ্ন দেখছেন। তখন দেশের হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ মানুষ এসে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। কেউ অর্থ দিয়ে, কেউ সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে দেশের স্বাধীনতার যুদ্ধে সামিল হয়েছিলেন। দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে এই সব মানুষের ত্যাগ খুব বেশি কেউ মনে রাখেনি। তবে এই ভুলে যাওয়া মানুষদের মধ্যে একজন ছিলেন আব্দুল হাবিব ইউসুফ মারফানি। তিনি নিজের সব সম্পদ তুলে দিয়েছিলেন দেশের কাজে।
বর্তমান গুজরাটের সৌরাষ্ট্রে বসবাস কতেন মারফানির পরবার। পরবর্তীতে তাঁরা মায়ানমার বা তৎকালীন বার্মার রেঙ্গুনে বসবাস করতে শুরু করেন। পরবর্তীতে আজাদ হিন্দ ফৌজের জন্য নেতাজি যখন অর্থ সংগ্রহ শুরু করেন তখন এই আব্দুল হাবিব ইউসুফ মারফানিপ্রথম ব্যক্তি যিনি তাঁর সমস্ত সম্পত্তি আজাদ হিন্দকে দান করেন। তিনি সেই সময়ের হিসাব অনুযায়ী প্রায় ১ কোটি ৩ লক্ষ টাকা দান করেন আজাদ হিন্দ ফৌজকে। মুদ্রাস্ফীতির হার বছরে ৬ শতাংশ ধরলে আজকের দিনে দাঁড়িয়ে ওই টাকার পরিমাণ হবে ১ লক্ষ ৪০ হাজার কোটি টাকার আশেপাশে। যদিও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্সের বিচারে ওই টাকার বর্তমান মূল্য ১৯০ কোটি টাকার আশেপাশে।
মারফানির এই দানে অভিভূত হয়ে পড়েছিলেন নেতাজি। তিনি জিজ্ঞাস করেছিলেন, কী চান মারফানি। জবাবে রেঙ্গুনের ওই ব্যবসায়ীর জবাব ছিল, তাঁকে যেন আজাদ হিন্দ ফৌজের কাজে নেওয়া হয়। নিজের সব সম্পদ তিনি দিয়েছেন। এবার শরীরের সব রক্তও দিতে চান দেশের জন্য। দেশের স্বাধীনতা ছাড়া আর কিছু চান না তিনি। ভারতের এই মহান সন্তানদের, এই মহৎ উদ্যোগের গল্প হয়তো হারিয়ে গিয়েছে কালের গর্ভে। তবে, তাঁরাই আমাদের বারেবারে শিখিয়ে যান নিজের সবটুকু উজাড় করে দিয়ে দেশমাতৃকাকে ঠিক কতটা ভালবাসা যায়।