নয়া দিল্লি: হাতে আর সময় নেই। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই যন্তর মন্তরে সভা শুরু হবে তৃণমূলের। বকেয়া পাওনা আদায়ের জন্য কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে বাংলার বিভিন্ন জেলা থেকে একাধিক বাসে করে দিল্লি এসেছেন জব কার্ড হোল্ডার-সহ কয়েকশো তৃণমূল কর্মী। স্বাভাবিকভাবেই সরগরম হয়ে উঠতে চলেছে যন্তর মন্তর (Jantar Mantar)। তাই অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এদিন বিশেষ নিরাপত্তা মোতায়েন করা হয়েছে যন্তর মন্তর চত্বরে। বিশাল পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে নামানো হয়েছে ব়্যাফ। কীভাবে ভিড় সামলানো হবে, তার রণকৌশল শুরু করে দিয়েছে দিল্লি পুলিশ (Delhi Police)।
সাধারণত যন্তর মন্তরে চত্বরে সবসময়ই পুলিশ মোতায়েন থাকে। তবে এদিন যে আঁটোসাঁটো নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে, তা কার্যত নজিরবিহীন। তৃণমূলের সভা শুরুর প্রায় ঘণ্টা দুয়েক আগে থেকেই যন্তর মন্তর চত্বরে মোতায়েন হয়েছে দিল্লি পুলিশের বিশাল বাহিনী এবং ব়্যাফ। যন্তর মন্তর-সংলগ্ন রাস্তা একের পর এক ব্যারিকেড দিয়ে আটকানোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। মোতায়েন রয়েছে জলকামান। একেবারে মূল সভাস্থল ঘিরে রেখেছে বিরাট পুলিশ বাহিনী। রয়েছে কমান্ডো এবং মহিলা পুলিশ বাহিনীও।
বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ যন্তর মন্তর চত্বরে গিয়ে দেখা গেল, কীভাবে ভিড় ঠেকানো যাবে, নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে জনগণ যাতে এগোতে না পারে, তার জন্য রণকৌশল ঠিক করে দিচ্ছেন দিল্লি পুলিশের আধিকারিক। কোনভাবেই যাতে ব্যারিকেড না ভাঙ্গে সে বিষয়ে নিশ্চিত করার জন্য বাহিনীকে অর্ডার দিচ্ছেন ওই পুলিশ আধিকারিক। ব্যারিকেড ভাঙ্গার চেষ্টা করলে বা ব্যারিকেড ভেঙে পড়লে লাঠিধারী পুলিশকে এগিয়ে আসারও নির্দেশ দিচ্ছেন দিল্লি পুলিশের ওই শীর্ষ আধিকারিক। এছাড়া ব়্যাফ মোতায়েন রয়েছে। মোতায়েন রয়েছে জলকামানও। সবমিলিয়ে, বিক্ষুব্ধ জনগণকে ঠেকাতে তৎপর দিল্লি পুলিশ।
এদিন দুপুর ১টা নাগাদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে যন্তর মন্তরে তৃণমূলের প্রতিবাদ সভা শুরু হওয়ার কথা। চলবে বিকাল ৫টা পর্যন্ত। যদিও সাধারণ মানুষের গায়ে হাত পড়লে পরিণতি ভয়ঙ্কর হবে বলে সোমবারই কড়া বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার রাজঘাটে তৃণমূল সাংসদদের শান্তিপূর্ণ ধরনা কর্মসূচির সময় দিল্লি পুলিশ নানাভাবে তাঁদের হেনস্থা করেছে, মহিলা কর্মীদের তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেছে, তাঁদের সঙ্গে পুলিশকর্মীদের ধ্বস্তাধস্তি হয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকি দুপুর ৩টে নাগাদ ধরনা কর্মসূচি তোলার জন্য তৃণমূলকে ৫ মিনিট সময় বেঁধে দেয় দিল্লি পুলিশ। ধরনা না উঠলে বলপ্রয়োগ করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। রাজঘাটেই দিল্লি পুলিশের বিশাল বাহিনী ও ব়্যাফ নেমে গিয়েছিল। যদিও কোনরকম বচসায় না গিয়ে তৃণমূল সাংসদরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই রাজঘাট ছেড়ে বেরিয়ে যান। তবে রাজঘাটের বাইরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাংবাদিক সম্মেলন করার সময়ও দিল্লি পুলিশ বারবার হুইসেল বাজিয়ে বিরক্ত করছিল এবং অভিষেকের প্রাণনাশের চেষ্টা করা হয় বলেও অভিযোগ তোলেন প্রবীণ সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে যন্তর মন্তরেও দিল্লি পুলিশ জনগণের উপর আক্রমণ চালাতে পারে বলে আশঙ্কা তৃণমূল নেতৃত্বের। তাই সোমবার রাতেই হুঁশিয়ারির সুরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “তৃণমূলকে মারুন। আমাদের গায়ে হাত পড়লে মেনে নেব। কিন্তু, কাল যদি একটা সাধারণ মানুষ , জব কার্ড হোল্ডারদের গায়ে আঁচড় পড়ে তার ফল খারাপ হবে। বিজেপি যে ভাষা বোঝে সেই ভাষায় উত্তর দিতে জানি।”