নয়া দিল্লি: অভাবে নাকি স্বভাবে চোর! সারা দেশে প্রায় ৫০০টির বেশি চুরির ঘটনায় অভিযুক্ত। ২০০টি চুরির কথা স্বীকারও করেছে। সেই অভিযুক্ত চোর মনোজ চৌবের নামে রয়েছে একাধিক সম্পত্তি। কেবল দেশে নয়, বিদেশেও সম্পত্তির মালিক মনোজ। শুধু তাই নয়, মনোজের স্ত্রীও রয়েছে একাধিক। সম্প্রতি দিল্লি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হতেই ফাঁস হয়ে এই সমস্ত তথ্য। যা বলিউড সিনেমা (Hindi Movie) ‘ওয়ে লাকি! লাকি ওয়ে!’-র কথা মনে করিয়ে দেয়। তাই বলা যায়, হাই প্রোফাইল চোর (High Profile Thief) হল মনোজ।
পুলিশ জানায়, দেশজুড়ে একাধিক চুরির ঘটনায় অভিযুক্ত ৪৮ বছর বয়সি মনোজ চৌবে। সোমবার তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারির পর মনোজ ২০০টি চুরির অভিযোগের কথা স্বীকার করেছে। মনোজের দেশ ও বিদেশ মিলিয়ে সম্পত্তির পরিমাণও যথেষ্ট। নেপালে তার হোটেলও রয়েছে। এছাড়া তার দুই স্ত্রী রয়েছে। যার মধ্যে একজন নেপালের নাগরিক।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, মনোজের এক স্ত্রী লখনউয়ে এবং আরেক স্ত্রী দিল্লিতে থাকেন। কিন্তু, তাঁরা কেউই জানেন না যে, তাঁদের স্বামী আদতে চোর। উত্তর-পশ্চিম দিল্লির ডেপুটি পুলিশ কমিশনার জিতেন্দ্র কুমার মীনা জানান, মনোজ চৌবে উত্তরপ্রদেশের সিদ্ধার্থ নগরের বাসিন্দা। সে চুরি করতে দিল্লিতে আসত। দিল্লির কারাওয়াল নগর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
চুরি করতে গিয়ে এর আগেও অবশ্য কয়েকবার ধরা পড়েছিল মনোজ। ১৯৯৭ সালে প্রথমবার দিল্লিতে এসে একটি ক্যান্টিনে চুরি করতে গিয়েই ধরা পড়েছিল মনোজ। নিষিদ্ধ এলাকার বাড়িগুলিই ছিল তার প্রধান নিশানা।
এরপর চুরির টাকাতেই মনোজ নেপালে হোটেল তৈরি করে। এছাড়া উত্তরপ্রদেশে এক স্ত্রীর নামে একটি গেস্ট হাউসও কিনেছে। এছাড়া ওই এলাকায় একখণ্ড জমিও কিনেছে এবং সেটি স্থানীয় হাসপাতালকে লিজ দিয়েছে। যার মাসিক ভাড়া ২ লক্ষ টাকা। এছাড়া লখনউয়ে তার একটি বাড়ি আছে এবং তার সন্তান দিল্লির একটি নামজাদা স্কুলের পড়ুয়া।
পুলিশ সূত্রে খবর, এর আগে ৯ বার দিল্লি পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিল মনোজ চৌবে। কিন্তু, প্রতিবারই সে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এবার মডেল টাউন এলাকায় একটি বাড়িতে ডাকাতি করার পর মোটরবাইকে করে পালিয়ে গেলেও সেখানকার সিসিটিভির ফুটেজের ভিত্তিতে শেষ পর্যন্ত ধরা পড়ে যায়। পুলিশ প্রথমে ওই মোটরবাইকের চালক বিনোদ থাপাকে গ্রেফতার করে। সে আদতে নেপালের নাগরিক। তারপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই মনোজের হদিশ মেলে। পুলিশি জেরায় বিনোদ থাপা জানিয়েছে, তার বোনকে বিয়ে করেছে মনোজ। তারপর হাই প্রোফাইল চোর মনোজের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগ ও সম্পত্তির পরিমাণ জেনে হতবাক পুলিশও।
তবে মনোজের ১০ গুণ চুরির ঘটনায় অভিযুক্তও রয়েছে। গত বছরই দিল্লি পুলিশ চুরির ঘটনায় এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছিল। সে ৫০০০টি চুরির ঘটনায় যুক্ত বলে পুলিশি জেরায় স্বীকার করেছে।