দেরাদুন: একের পর এক ভূমিকম্পে (Earthquake) কেঁপে উঠছে মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়া। মঙ্গলবার রাতে জোরাল ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল আফগানিস্তানের (Afghanistan) উত্তর পার্বত্য অঞ্চল। এই ভূমিকম্পে আফগানিস্তানের ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রভাব পড়েছিল ভারতেও। দিল্লি (Delhi) সহ সমগ্র উত্তরাঞ্চলে (North India) কম্পন অনুভূত হয়েছিল। এভাবে পরপর ভূমিকম্পের ঘটনা যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলেই দাবি ভূ-বিশেষজ্ঞদের। যে কোনও সময় হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে (Himalayan Region) বড় ধরনের ভূমিকম্প ঘটতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করছেন তাঁরা।
বর্তমানে মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-কম্প প্রবণ দেশগুলি হল, ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, চিন ছাড়াও রয়েছে কাজাখাস্তান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান এবং কিরঘিস্তান। এই দেশগুলির মধ্যে আবার একেবারে হিমালয়ের কোলে অবস্থিত ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, চিনের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। তা সত্ত্বেও হিমালয়ের কোলে পাহাড় কেটে উঠছে বহুতল, হোটেল, তৈরি হচ্ছে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পও। যার গভীর প্রভাব পড়ছে ভূ-পৃষ্ঠে। এছাড়া হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল এমনিতেই ভূ-কম্প প্রবণ। ফলে যে কোনও বড় ভূমিকম্প ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন হিমালয়ান জিওলজির ওয়াদিয়া ইনস্টিটিউটের গবেষক ড. অজয় পল। তিনি জানান, হিমালয়ান অঞ্চল সেসমিক জোন-৫ (খুব স্পর্শকাতর জোন)-এর মধ্যে পড়ে। ফলে যে কোনও সময়ে এই অঞ্চলে ভূমিকম্প হতে পারে।
যদিও কখন ভূমিকম্প ঘটবে তা আগে থেকে পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয় বলেও মনে করেন ড. অজয় পল। তিনি বলেন, যখন টেকটোনিক প্লেটস থেকে শক্তি নির্গত হয়, তখনই ভূমিকম্প হতে পারে। ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব না হলেও ভূমিকম্পের ক্ষতি থেকে অন্তত কিছুটা রক্ষা পাওয়া সম্ভব এবং এবিষয়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করেন তিনি। অর্থাৎ ভূমিকম্প মোকাবিলায় সক্ষম এমন পরিকল্পনা করেই ঘর-বাড়ি, হোটেল তৈরির কথা বলছেন তিনি। পাশাপাশি হিমালয়ের কোলে অতিরিক্ত বাড়ি বা বড়-বড় হোটেল এবং তার থেকে সৃষ্ট দূষণও যে ভূ-পৃষ্ঠের উপর প্রভাব ফেলতে পারে এবং সেটিও ভূমিকম্পের কারণ হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ভূ-বিশেষজ্ঞরা।