
নয়া দিল্লি: হিন্দি অন্য কোনও ভারতীয় ভাষার প্রতিযোগী নয়। বরং দেশের অন্যান্য ভাষার “বন্ধু” হল হিন্দি। হিন্দি দিবস উপলক্ষে অল ইন্ডিয়া অফিসিয়াল ল্যাঙ্গুয়েজ কনফারেন্সে বক্তৃতা দিতে গিয়ে এমনই দাবি করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। হিন্দি ভাষাকে অন্যান্য ভারতীয় ভাষার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তুলে ধরে “বিভ্রান্তি” তৈরিরও তীব্র নিন্দা করেছেন তিনি। অমিত শাহ বলেন, “হিন্দি একটি সরকারি ভাষা হিসাবে সমগ্র দেশকে ঐক্যের সূত্রে একত্রিত করে।” হিন্দি ভাষার এই একীভূতকরণের ক্ষমতাকে তুলে ধরার পাশাপাশি এদিন দেশের আঞ্চলিক ভাষাগুলিকে শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তার উপরও জোর দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকার হিন্দি-সহ সমস্ত স্থানীয় ভাষার “সমান্তরাল উন্নয়নের” জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
অমিত শাহ বলেন, “আমি একটি জিনিস খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই। হিন্দি ও গুজরাটি, হিন্দি ও তামিল, হিন্দি ও মারাঠি পরস্পরের প্রতিযোগী বলে কিছু লোক ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে। হিন্দি দেশের অন্য কোনও ভাষার প্রতিদ্বন্দ্বী নয়। হিন্দি দেশের সমস্ত ভাষার বন্ধু। প্রত্যেকেরই এটা মেনে নেওয়া এবং বোঝা উচিত। যতদিন আমরা ভাষার সহাবস্থানকে মেনে নেব না, ততদিন আমরা নিজেদের ভাষায় দেশ পরিচালনার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারব না। আমি আন্তরিকতাভাবে বলতে চাই, সকল ভাষা ও মাতৃভাষাকে রক্ষা করা এবং সমৃদ্ধ করাই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত। হিন্দি ভাষা সমৃদ্ধ হলেই এই সমস্ত ভাষার সমৃদ্ধি ঘটবে। আবার উল্টোটাও সত্যি।”
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও এদিন হিন্দি দিবস উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। টুইটে করে তিনি বলেছেন, “হিন্দি সারা বিশ্বে ভারতকে বিশেষ সম্মান এনে দিয়েছে। বরাবরই এর সরলতা, স্বতঃস্ফূর্ততা এবং সংবেদনশীলতা অত্যন্ত আকর্ষণীয়। যাঁরা এই ভাষাকে সমৃদ্ধ এবং ক্ষমতায়িত করতে অক্লান্ত অবদান রেখেছেন, হিন্দি দিবসে, আমি তাঁদেরকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।”
গত কয়েক বছর ধরেই হিন্দি ভাষা নিয়ে দেশ জুড়ে বিতর্ক চলছে। বিরোধীদের অভিযোগ কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের পক্ষ থেকে দেশের অ-হিন্দিভাষী জনতার উপর, বিশেষ করে দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলির জনগণের উপর হিন্দি ভাষাকে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এদিন কর্ণাটকে, হিন্দি ভাষা দিবস উদযাপনের প্রতিবাদ জানিয়েছে জেডি (এস)। বুধবার বেঙ্গালুরুতে বিক্ষোভ জানিয়ে জেডি (এস) নেতা এইচ ডি কুমারস্বামী বলেন, “কন্নড় ভাষা উদযাপনের পরিবর্তে, বোম্মাই সরকার হিন্দি ভাষা উদযাপন করছে।” কর্ণাটকের প্রাক্তন বিধায়ক তথা কন্নড় চালভালি ভাটাল পক্ষের নেতা, ভাটাল নাগরাজকে এদিন হিংসাত্মক প্রতিবাদ সংগঠিত করার জন্য গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তামিলনাড়ুর ক্ষমতাসীন ডিএমকে দলও অহিন্দিভাষী ভারতীয়দের উপর হিন্দি ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের দিকে আঙুল তুলেছে।