
কোচি: কোনও মহিলার হাত চেপে ধরলে বা তাঁকে হত্যার হুমকি দিলেই, ওই মহিলার শালীনতা ক্ষুণ্ণ হয়েছে বলা যাবে না। অন্তত, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ ধারার আওতায় নয়। সম্প্রতি এক মামলার রায় ঘোষণার সময় এই গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ করল কেরলের এক ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট। বিচারক আলুভা সন্তোষ টি.কে জানিয়েছেন, ওই মহিলার শালীনতা ক্ষুন্ন করার অভিপ্রায়েই অভিযুক্ত ব্যক্তি তাঁকে আক্রমণ করেছে বা তাঁর উরর বল প্রয়োগ করেছে, এটা আদালতে প্রমাণ করতে হবে। তিনি বলেছেন, “শুধু আক্রমণ করা হয়েছে বা বল প্রয়োগ করা হয়েছে, তা প্রমাণ করলেই চলবে না। এই ধারায় অপরাধীকে দোষী সাব্যস্ত করতে গেলে, তার যে নির্যাতিতার শালীনতা ক্ষুণ্ণ করার অভিপ্রায় ছিল, তাও প্রমাণ করতে হবে। শুধুমাত্র নির্যাতিতার হাত ধরে তাঁকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল বললে, ৩৫৪ ধারায় তাকে অপরাধ বলা যাবে না।”
আবেদন অনুযায়ী, এক মন্দিরে পুজো দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন আবেদনকারী মহিলা। তাঁর সঙ্গে অশালীন আচরণ করার উদ্দেশ্যে তাঁর হাত চেপে ধরেছিল অভিযুক্ত। তাঁকে হত্যার হুমকিও দিয়েছিল সে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ ধারা বা মহিলার শালীনতা ক্ষুণ্ণ করার উদ্দেশ্যে আক্রমণ বা বলপ্রয়োগ করা এবং ৫০৬ (১) বা অপরাধমূলক হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করে মামলা দায়ের করেছিলেন তিনি। এই মামলার ক্ষেত্রে দুই ধারায় অভিযোগ জানানো যায় কিনা, আদালতে এই প্রশ্ন ওঠে। বিচারক জানান, অভিযুক্ত লালসা চরিতার্থ করতে নির্যাতিতা ব্যবহার করতে চেয়েছিল, বা তাকে কোনও অশালীন কথা বলেছিল, এমন কোনও প্রমাণ দিতে পারেনি আবেদনকারীরা। ফলে, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ ধারা র অধীনে অভিযুক্তকে অপরাধী বলা যাবে না।
অন্যদিকে, ৫০৬ ধারার অধীনে চারটি উপধারা আছে। কোন কোন ক্ষেত্রে এই ধারা প্রয়োগ করা যাবে, উপধারাগুলিতে তা স্পষ্ট করা আছে। ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট জানিয়েছে, এই ক্ষেত্রে হুমকি দেওয়া হয়েছে। ফলে, আদালত ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ ধারার অধীনে অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস দিয়েছে। তবে, ৫০৬ ধারার অধীনে ওই মহিলাকে হত্যার হুমকি দেওয়ার জন্য তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। তাকে দুই বছরের কারাদণ্ড এবং ৫,০০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।