বিজাপুর: ছত্তীসগঢ়ের সুকমা-বিজাপুর সীমান্তে মাওবাদীদের সঙ্গে সংঘর্ষে শহিদ হয়েছেন ২২ সিআরপিএফ জওয়ান। সাম্প্রতিককালে এত ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা আর ঘটেনি। এই ঘটনার পর সোমবার বিজাপুর গেলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিজাপুর থেকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বললেন, ‘মাওবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াই আরও জোরদার হবে।’ আর সেই লড়াইতে সাফল্য আনার বিষয়টিও নিশ্চিত করার কথা জানিয়েছেন তিনি।
এ দিন সকালেই বিজাপুরে যান তিনি। সেখানে ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেলের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘যে ঘটনা ঘটেছে, তারপর মাওবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াই আরও জোরদার হবে। আর সেই লড়াইতে সাফল্য আসবেই।’ শহিদ জওয়ানদের পরিবারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদের পরিবারের সদস্যের এই বলিদান ব্যর্থ হবে না।’
অন্য দিকে এই হামলার ঘটনায় গোয়েন্দা সূত্রে পাওয়া খবরে কোনও ত্রুটি ছিল না বলেই জানিয়েছেন সিআরপিএফের ডিজি কুলদীপ সিং। ছত্তীসগঢ়ে ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখে এ কথা জানিয়েছেন তিনি। কুলদীপ সিং আরও জানিয়েছেন, সিআরপিএফের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২৫ থেকে ৩০ জন মাওবাদীর। সঠিক সংখ্যা এখনও জানা যায়নি।
শনিবার দুপুরে তারেম অঞ্চলের জঙ্গলে মাওবাদীদের খোঁজে যৌথ বাহিনী যে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল এরপরই মাওবাদীদের সঙ্গে সংঘর্ষে শহিদ হন একাধিক জওয়ান।
শনিবার মাওবাদী উপস্থিতির খবর পেয়েই ছত্তীসগঢ়ের সুকমা ও বিজাপুরের পাঁচটি ক্যাম্প থেকে প্রায় ২ হাজার জওয়ান তল্লাশি অভিযান শুরু করে। এদের মধ্যে সিআরপিএফ, কোবরা বাহিনী, ডিআরজি ও স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা বিজাপুরের তারেম, উসুর ও পামেদ এবং সুকমার মিনপা ও নরসাপুরমে তল্লাশি অভিযান চালায়।
আরও পড়ুন: এক দিনে ১ লক্ষ, দৈনিক সংক্রমণে সর্বকালের রেকর্ড ভারতে
সিআরপিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, “মোস্ট ওয়ান্টেড” মাওবাদী নেতা হিদমা ওই জঙ্গলেই উপস্থিত ছিল। তাকে ধরার জন্যই এই অভিযান চালানো হয়, তবে অতর্কিতেই যৌথ বাহিনীর উপর হামলা করে মাওবাদীরা। প্রাথমিক তল্লাশিতে মাওবাদীদের খোঁজ না মেলায় ক্যাম্পে ফিরে আসছিলেন যৌথ বাহিনীর জওয়ানরা। সেই সময়ই চারদিক থেকে হামলা চালায় জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা মাওবাদীরা। রবিবার জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায় একের পর এক জওয়ানের দেহ। গাছের নিচে সেনা জওয়ানদের দেহ থেকে শুরু করে গুলি, মর্টার পড়ে থাকতে দেখা যায়। সিআরপিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, হামলায় প্রায় দুই ডজনেরও বেশি অস্ত্র লুট করেছে মাওবাদীরা।