
নয়াদিল্লি: সেনা শক্তি বটেই ভারতের ‘আত্মনির্ভর’ তত্ত্বও সাফল্য এনেছে অপারেশন সিঁদুরে, এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। গত ৭ই মে পাকিস্তানে পহেলগাঁও সন্ত্রাসহানার ভিত্তিতে ‘প্রত্যাঘাত’ চালায় নয়াদিল্লি। উড়িয়ে দেওয়া হয় একের পর এক জঙ্গি ঘাঁটি। পাক অধিকৃত কাশ্মীর-সহ সিন্ধ ও পঞ্জাব প্রদেশের সন্ত্রাস ছাউনিগুলিকে গুঁড়িয়ে দেয় সেনা।
এই ঘটনার পরদিন জঙ্গিদের হয়ে ‘প্রতিশোধ নিতে চলে আসে পাকিস্তান। ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকা, বিশেষ করে গুজরাটের কচ্ছ, পঞ্জাবের ফিরোজপুর, কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় হামলায় পাক সেনা। ড্রোন উড়িয়ে ভারতের জনসাধারণ ও সেনাকে ‘শেষ’ করে দিতে চেয়েছিল তারা। হামলা চালিয়েছিল ৩০০ থেকে ৪০০ ড্রোন নিয়ে। কিন্তু ওত বড় হামলা চালিয়েও একটা চুল বাঁকাতে পারেনি তারা। উল্টে দেশের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কাছে উদ্যম মার খেয়ে পাকিস্তানি ড্রোন। নিস্ক্রিয় চিনা মিসাইল। গুঁড়িয়ে দেয় তুরস্কীয় ড্রোন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মূলত দেশের ‘মেক-ইন-ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের হাত ধরেই নতুন করে গতি পেয়েছে দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর ভারতকে ‘আত্মনির্ভর’ করার প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রতিশ্রুতি দেন দেশের প্রতিরক্ষাকেও আত্মনির্ভর করে তোলার। এরপর কেটে গিয়েছে একটা দশক।
কতটা এগিয়েছে ভারতের প্রতিরক্ষা?
একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে ভারতের প্রতিরক্ষা উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ১.২৭ লক্ষ কোটি টাকা। ২০১৪ অর্থবর্ষে এই উৎপাদনের পরিমাণ ছিল মাত্র ৪৬ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ মাত্র ৯ বছরেই দেশীয় প্রযুক্তিতে প্রতিরক্ষা উৎপাদন বেড়েছিল মোট ১৭৪ শতাংশ।
শুধু উৎপাদনই নয়। প্রতিরক্ষা বাজেটেও দেখা গিয়েছে, বিরাট মাপের বৃদ্ধি। হিসাব বলছে, ২০১৩ অর্থবর্ষে প্রতিরক্ষা খাতের জন্য মোট ২.৫৩ লক্ষ কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দ করেছিল কেন্দ্র সরকার। যা ২০২৫ সালে পৌঁছে গিয়েছে প্রায় সাত লক্ষ কোটি টাকা গন্ডিতে। চলতি বছরের বাজেটেই প্রতিরক্ষা খাতে ৬.৮১ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে অর্থমন্ত্রক। সূত্রের খবর, অপারেশন সিঁদুরের সাফল্যের পর এই বাজেট মাঝ অর্থবর্ষেই আরও বাড়াতে পারে কেন্দ্র। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পকেটে ঢুকতে পারে বাড়তি ৫০ হাজার কোটি টাকা।