হায়দরাবাদ: ম্যাজিক পাত্র। সামনে যা রাখা হচ্ছে, তাই-ই আকর্ষণ করছে। আপনাআপনিই চাল ভর্তি হয়ে যাচ্ছে পিতলের পাত্রে। এই পাত্র যে সে কোনও উপাদান দিয়ে তৈরি নয়, মাটিতে বাজ আছড়ে পড়ার পর ওই বিদ্যুৎ থেকেই তৈরি করা হয়েছে পাত্রটি। ফলে এর বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে। চন্দ্রযান-৩ উৎক্ষেপণেও ব্যবহার করা হয়েছিল এই পাত্র। এমনই গল্প শুনিয়ে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিল প্রতারকরা।
ঘটনাটি ঘটেছে তেলঙ্গানার হায়দরাবাদে। চলতি সপ্তাহের বুধবার হায়দরাবাদ সেন্ট্রাল ক্রাইম স্টেশনের স্পেশাল টিম ওই প্রতারণা চক্রের হদিস পায়। এক ব্যবসায়ীকে ঠকিয়ে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় ৪ জনকে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গ্যাং পরিকল্পনামাফিক এক ব্যবসায়ীকে ফাঁসান। তাঁকে বলেন যে তাদের কাছে এমন একটি ম্যাজিক তামার পাত্র রয়েছে, যা বিদ্যুতের ঝলকানি থেকে চার্জ হয়। এই ম্যাজিক পাত্রের অত্য়াশ্চর্য ক্ষমতা রয়েছে। যদি নাসা বা ইসরোর কাছে এই পাত্র বিক্রি করা যায়, তবে অনেক কোটি টাকা পাওয়া যাবে।
জানা গিয়েছে, মূল অভিযুক্ত বিজয় কুমার জলসা করতেন। কিরণ নামের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে তাঁর পাবে দেখা হয়। ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পারেন যে তাঁকে ঠকানো সহজ। এরপরই তাঁর কাছে গিয়ে গল্প ফাঁদেন। নিজেকে রিয়েলটর বলে পরিচয় দেন বিজয়। কিরণকে বোঝান যে তাঁর কাছে একটি পিতলের পাত্র রয়েছে। মাটিতে আছড়ে পড়া বিদ্যুৎ থেকে ওই পাত্র তৈরি। বিজয়ের বন্ধু সাই ভরদ্বাজ ও মৌলালি নামক দুই যুবকও সেই নাটকে অংশ নেন।
ওই গল্পে বিশ্বাস করেই কিরণ ৩ কোটি টাকা দিতে রাজি হন। প্রথম কিস্তিতে তিনি ৫০ লক্ষ টাকা দেন। দ্বিতীয় কিস্তিতে ৯০ লক্ষ টাকা, তৃতীয় কিস্তিতে ১২ লক্ষ টাকা ও চতুর্থ কিস্তিতে ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা দেন। ৬ মাসে মোট ৩ কোটি টাকা দিলেও কিরণ ও তাঁর সহকারীরা ওই পিতলের পাত্র না দেওয়ায় তিনি পুলিশে অভিযোগ জানান। এরপরই পুলিশ তদন্ত করে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে। জেরায় জানা যায়, ওই চারজন এর আগেও বহু মানুষকে ঠকিয়ে ২০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন।