নয়া দিল্লি : হনুমান জয়ন্তীতে (Hanuman Jayanti) দেশবাসীকে ‘বড় উপহার’ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi)। শনিবারই গুজরাতের (Gujrat) মরাবিতে ‘ভগবান হনুমানে’র একটি ১০৮ ফুট লম্বা মূর্তি উন্মোচন করেন তিনি। চারধাম প্রকল্পের আওতায় দেশের চার দিকেই হনুমানের মূর্তি স্থাপন করা হচ্ছে। শনিবার উদ্বোধন করা মূর্তিটি এই প্রকল্পের দ্বিতীয় মূর্তি। এদিন সকাল ১১ টা নাগাদ মূর্তি উন্মোচন করেন নমো। মূর্তি উন্মোচনের পর ভার্চুয়ালি জাতীর উদ্দেশ্যে ভাষণও দিতে দেখা যায় মোদীকে। সেখানেই তিনি দেশের অগ্রগতি, শ্রীবৃদ্ধি নিয়ে নানা রূপরেখাও তুলে ধরেন। এদিন মোদী বলেন, ‘আমরা এই ভাবে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকতে পারি না। এতে দেশের সাময়িক অগ্রগতিই থমকে যায়। যেভাবে দ্রুত গতিতে বৈশ্বিক মানচিত্র বদলাচ্ছে তাতে প্রতিটা দেশই ভাবছে কীভাবে দ্রুত আত্মনির্ভর হওয়া যায়।’
মোদী আরও বলেন, ‘আমি দেশের সাধু-সন্তদের অনুরোধ করব তারা যেন সাধারণ মানুষকে দেশীয় পণ্য কেনার প্রতি উৎসাহিত করেন। দেশীয় পণ্যে জোর দেওয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য। আমাদের বাড়িতেও শুধুমাত্র আমাদের দেশের মানুষের তৈরি পণ্যই ব্যবহার করা উচিৎ। একবার ভেবে দেখুন, যদি এটা সম্ভব হয় তবে কত বেশি সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান সম্ভব হবে। বিদেশি পণ্য আমাদের মনে এক ধরনের আত্মতুষ্টির জন্ম দিলেও দেশীয় পণ্যের বিকল্প কিছুই হতে পারে না। দেশীয় পণ্যের মধ্যে দেশের মানুষের কঠিন পরিশ্রম, দেশমাতার ছোঁয়া লেগে রয়েছে, তা ভুলে গেলে চলবে না। এটা মনে রেখে আগামী ২৫ বছরে যদি আমরা শুধুমাত্র দেশীয় পণ্য ব্যবহারে বেশি করে জোর দিতে থাকি তাহলে দেশে আর কোনও বেকারত্বই থাকবে না।’
এদিকে ‘ভগবান হনুমানে’র চারধাম প্রকল্পের প্রথম মূর্তিটি ২০১০ সালে সিমলায় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। গুজরাতের মরাবির মূর্তিটি এই তালিকায় দ্বিতীয়। এরপরের মূর্তিটি দক্ষিণ ভারতের রামেশ্বরে প্রতিষ্ঠা করা হবে বলে জানা যাচ্ছে। সেটির কাজও ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বলে জানাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর। প্রসঙ্গত, গুজরাত বরাবরই মোদী গড় বলে পরিচিত। চলতি বছরের শেষেই ভোট রয়েছে সেখানে। ভোটের ময়দানে বাজিমাত করতে এখন থেকেই জোরকদমে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে শাসক-বিরোধী প্রত্যেকেই। তবে বিরোধীদের শক্তি বৃদ্ধির মাঝেও এক ইঞ্চিও মাটি ছাড়তে নারাজ মোদী ব্রিগেড। এমতাবস্থায় এই বিশালাকার হনুমান মূর্তি উন্মোচন গেরুয়া শিবিরের ভোট ব্যাঙ্ক শক্ত করবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একটা বড় অংশ। ইতিহাস বলছে হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির হাত ধরে গুজরাতে বরাবরই ভালো ফল করেছেন মোদী-শাহরা। এবার সেখানেই স্বয়ং হনুমানজীর মূর্তি গেরুয়া শিবিরে নতুন করে পদ্ম ফোটাতে কতটা সাহায্য করে এখন সেটাই দেখার।