
পাঁচ বছরের লম্বা বিরতি কাটিয়ে ২৬ অক্টোবর, কলকাতা থেকে চিনা শহর গুয়াংঝউয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দেবে ইন্ডিগোর বিমান। করোনার কারণে ২০২০ সাল থেকে বন্ধ ছিল এই পরিষেবা। যদিও করোনা নয়, এই পরিষেবা বন্ধের মুখ্য কারণ ছিল গালওয়ানের সীমান্ত সংঘাত। আর এবার যেন সেই দূরত্বের বরফ গলতে শুরু করল আমাদের শহর কলকাতার হাত ধরেই।
ভারতের সঙ্গে চিনের বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনর্গঠনের এক সুস্পষ্ট ইঙ্গিত এটি। আর এই ইঙ্গিত আমাদের রাজ্যের জন্যও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই রুটের শুরু হচ্ছে কলকাতা থেকে।
ভারত ও চিনের এই বিমান পরিষেবার গুরুত্ব শুধু কত যাত্রী যাতায়াত করছেন, তা দিয়ে হিসাব করলে হবে না। ২০২০ সালের আগে বছরে ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষ ভারত ও চিনের মধ্যে যাতায়াত করতেন। এর মধ্যে যেমন রয়েছে ছাত্র-ছাত্রী, তেমনই রয়েছে ট্যুরিস্ট, ব্যবসায়ী সহ অন্যান্য মানুষও। এই সরাসরি বিমান পরিষেবা তাঁদের দ্রুত যোগাযোগের পথ খুলে দিল। এরপর আগামী ৯ নভেম্বর থেকে ফের চালু হচ্ছে সাংহাই–নয়াদিল্লি রুটের পরিষেবাও।
২০২০ সালে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক প্রায় তলানিতে ঠেকেছিল। সম্ভবত, ১৯৬২ সালের যুদ্ধের পরবর্তী সময় যা সবচেয়ে খারাপ। তবে সেনা ও কূটনৈতিক স্তরে একাধিক আলোচনার পর পরিস্থিতি কিছুটা হলেও বদলেছে। গত বছর সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাক্ষাৎই যেন নতুন পথের দিশা দেখায়। আর সেই আলোচনারই প্রথম সুনির্দিষ্ট ফলাফল এই বিমান পরিষেবা।
চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র গুও জিয়াকুন এটিকে ‘দুই দেশের বোঝাপড়ার বাস্তবায়ন’ বলে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁর মতে, এটি দুই দেশের মানুষে মানুষে আদানপ্রদান বাড়ানোর জন্য ইতিবাচক একটা পদক্ষেপ।
আপাতত সপ্তাহে তিন দিন চলবে এই পরিষেবা। ধীরে ধীরে চাহিদা বাড়লে বাড়বে ফ্লাইটের সংখ্যা। এক অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ যেমন বলছেন, উড়ান চালু হওয়া হয়তো দেখতে একটা ছোট পদক্ষেপ। কিন্তু দুই দেশের বাণিজ্যে এটা একটা বিরাট পদক্ষেপ হতেই পারে। কূটনৈতিক মহল মনে করছে, আগামী মাসগুলিতে বাণিজ্য-সহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের দিকে ঝুঁকতে পারে দুই দেশ।