
পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান এখনও আমাদের হাতে আসেনি। এদিকে, বেজিং বলছে যে তারা নাকি ষষ্ঠ প্রজন্মের যুদ্ধবিমানও বানিয়ে ফেলেছে। তাহলে কি আমাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ঘাটতি দেখা যাচ্ছে? চিন্তার কিছু আছে কি? এসব প্রশ্ন যে কেউ করতেই পারেন। তবে, এককথায় সহজ উত্তর হলো, না। ঘাটতি, চিন্তা কোনওটাই নেই। আকাশ সুরক্ষার জন্য থ্রি-লেয়ার প্রটেকশন মেকানিজম তৈরি করছে ভারত। তিনস্তরীয় সুরক্ষা বলয়। ব্রহ্মস মিসাইলের উন্নত ভার্সনের পাশাপাশি সমর-২ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। সঙ্গে বিয়ন্ড ভিসুয়াল রেঞ্জ এয়ার টু এয়ার মিসাইল, অস্ত্র। মানে ব্রহ্মস-সমর-অস্ত্রের সুরক্ষা বলয়। তিনটের সবক’টাই যে কোনও অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানের মোকাবিলা করতে পারে।
ব্রহ্মস দুনিয়ার যে কোনও যুদ্ধ বিমানকে টার্গেট করে ধ্বংস করতে পারে। আর অস্ত্র মিসাইল আকাশে খুব দ্রুত শক্রকে চিহ্নিত করতে ওস্তাদ। DRDO সূত্রে খবর, অস্ত্র-এমকে থ্রি’র দুটো ভ্যারিয়ান্ট তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। একটা শক্রর ঘরে ঢুকে হামলা করবে। অন্যটা হামলার পাশাপাশি শক্রর আক্রমণ প্রতিহত করবে। যতটা খবর পাচ্ছি, চিন আর অপারেশন সিঁদুরে মার খাওয়ার পর পাকিস্তান যেভাবে অস্ত্রসম্ভার বাড়ানোর চেষ্টা করছে, তার দিকে নজর রেখেই এইরকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরির কাজ শুরু হচ্ছে। রাশিয়া এবং আমেরিকা এই ধরণের ত্রিস্তরীয় সুরক্ষা বলয় ব্যবহার করে। ভারত এবার এই ক্লাবে ঢুকতে চলেছে।
প্রতিরক্ষা বিজ্ঞানীরা বলছেন, অস্ত্র, ব্রহ্মস ও সমর-এর ইন্টিগ্রেশন করে তৈরি হবে নতুন আকাশ প্রতিরক্ষা বলয়। এই পর্বই সবচেয়ে কঠিন। তবে তিনটে অস্ত্রই ভারতে তৈরি। এদের খুঁটিনাটি প্রতিরক্ষা বিজ্ঞানীরা খুব ভাল করেই জানেন। তাই ইন্টিগ্রেশনে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। পাশাপাশি, আইএনএস অরিঘাত থেকে পরমাণু অস্ত্রবাহী ব্যালেস্টিক মিসাইলের পরীক্ষা সেরে ফেলেছে ভারত। ৩ হাজার ৫০০ কিলোমিটার পাল্লার কে-ফোর মিসাইল জলে, স্থলে ও আকাশে টার্গেটকে ধ্বংস করতে পারে। কে-ফোর মিসাইলের পরীক্ষা সফল হওয়ার মানে সেকেন্ড স্ট্রাইকিং কেপেবিলিটি হাতে আসা।
সেকেন্ড স্ট্রাইকিং কেপেবিলিটি বিষয়টা কী? ধরুন, কোনও শক্র দেশ পরমাণু অস্ত্র নিয়ে আমাদের জল, আকাশ বা স্থলসীমায় হামলা চালাল। সেকেন্ড স্ট্রাইকিং কেপেবিলিটি থাকলে আমরাও প্রথমে ধাক্কা সামলে পাল্টা পরমাণু হামলা চালাতে পারব। আমেরিকা, রাশিয়া, চিন, ফ্রান্স ও ব্রিটেন ছাড়া আর কোনও দেশের হাতে সেই ক্ষমতা বা প্রযুক্তি ছিল না। ষষ্ঠ দেশ হিসাবে এই তালিকায় ঢুকে পড়েছে ভারত। সোজা কথায় চিন যদি ভারতের কোনও এলাকায় হামলার চেষ্টা করে, এবং তাতে সফলও হয়, তাহলেও আমাদের সামনে বিকল্প থাকবে। ভারতীয় সেনাও একইভাবে চিনের নিউক্লিয়ার অ্যাসেটের উপর হামলা চালাতে পারবে। ডিআরডিও সূত্রে খবর ভারতের নেক্সট টার্গেট কে-ফাইভ সিরিজ। অর্থাত্ সাড়ে ৩ হাজার নয়, ৫ হাজার কিমি পাল্লার অস্ত্র। হায়দরাবাদে ডিআরডিও-র অ্যাডভান্স নাভাল টেস্টিং ইউনিটে সেই কাজ চলছে। একইসঙ্গে ব্রহ্মসের নয়া ভার্সন, ব্রহ্মস শক্তি নিয়েও তেড়েফুঁড়ে নামছেন বিজ্ঞানীরা। ব্রহ্মস শক্তি প্রকল্পে নতুন করে টাকা বরাদ্দ করেছে প্রতিরক্ষামন্ত্রক। একমাত্র ভারতীয় সেনা ব্রহ্মস শক্তি পাবে, এই শর্তেই ব্রহ্মস এরোস্পেস কর্পোরেশনের সঙ্গে চুক্তি করেছে প্রতিরক্ষামন্ত্রক।