নয়া দিল্লি: লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে দেশের করোনা সংক্রমণ। ওমিক্রনের দাপটেই এই সংক্রমণ বৃদ্ধি হচ্ছে বলে মনে করা হলেও, বর্তমানে দেশের আর নট ভ্যালু সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের তুলনায় বেশি হওয়ায় কিছুটা উদ্বেগের মধ্যেই রয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। বুধবার স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে সাংবাদিক বৈঠকে জানানো হয়, দেশের আর নট ভ্যালু বর্তমানে বেড়ে দাড়িয়েছে ২.৬৯-এ, যা এ যাবৎ সর্বোচ্চ হার। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় দেশের আর ভ্যালু ছিল ১.৬৯।
সংক্রমণ কোন গতিতে এগোচ্ছে বা তার বিস্তার কতটা, তা বোঝা যায় আর নট ভ্য়ালুর (R naught value) মাধ্যমেই। আর ভ্যালু (R Value) ০.৯৫ হওয়ার অর্থ হল, প্রতি ১০০ জন করোনা আক্রান্ত গড়ে আরও ৯৫ জনকে সংক্রমিত করেন। যদি আর ভ্য়ালু ১ শতাংশের নীচে থাকে, তবে বোঝা যায় নতুন করে আক্রান্তদের সংখ্যা বর্তমানে সক্রিয় রোগীর তুলনায় কম। এর বিচারেই বলা হয় যে দেশে সংক্রমণ কমছে।
গতকালের সাংবাদিক বৈঠকে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকাল রিসার্চের ডিরেক্টর জেনারেল ডঃ বলরাম ভার্গব বলেন, “বিভিন্ন শহরে হঠাৎই করোনা সংক্রমণের ব্যপক বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে এবং ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের জেরেই যে এই সংক্রমণ, তা বোঝা যাচ্ছে। দেশেও ধীরে ধীরে ডমিন্যাট ভ্যারিয়েন্ট হয়ে উঠছে ওমিক্রন।”
কীভাবে সংক্রমণ রোখা সম্ভব, এই প্রশ্নের জবাবে আইসিএমআরের প্রধান ডঃ বলরাম ভার্গব বলেন, “সংক্রমণ রুখতে বা কমাতে প্রথমেই প্রয়োজন ভিড় জায়গা এড়িয়ে চলা।” নীতি আয়োগের সদস্য ডঃ ভিকে পালও বলেন, “আমরা হঠাৎ করে সংক্রমণের ব্যপক বৃদ্ধি দেখছি এবং আমাদের বিশ্বাস, এর বড় অংশই হচ্ছে ওমিক্রন ভ্য়ারিয়েন্টের কারণে। বিশেষত দেশের পশ্চিম অংশে ও বড় বড় শহরগুলিতে। প্রাপ্ত তথ্য এই কথাই বলছে।”
গত ৩০ ডিসেম্বর দেশে সংক্রমণের হার ছিল ১.১ শতাংশ, পরের দিনই তা বেড়ে ১.৩ শতাংশে পৌঁছয়। বর্তমানে দেশে সংক্রমণের হার ৫ শতাংশ পার করেছে। একইভাবে ৩০ ডিসেম্বর দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৩ হাজার, মঙ্গলবার সেই সংখ্য়াই ৫৮ হাজারে পৌঁছেছে।
এই বিষয়টি আরও স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে ডঃ ভিকে পাল বলেন, “বোঝাই যাচ্ছে যে মহামারির মেয়াদ আরও বাড়ছে। বর্তমানে দেশের আর নট ভ্যালু ২.৬৯। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ যখন শীর্ষে পৌঁছেছিল, তখন আর ভ্যালু ছিল ১.৬৯,অর্থাৎ এ যাবৎ এত দ্রুত সংক্রমণের বৃদ্ধি আগে হয়নি।”
তবে হাসপাতালে রোগী ভর্তির হার এখনও তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কম। দিল্লিতে এই হার ৩.৭ শতাংশ এবং মুম্বইয়ে ৫ শতাংশ। গতবছর ও ২০২০ সালে সংক্রমণের দুটি ঢেউয়ের সময় হাসপাতালে ভর্তির হার ছিল ২০ শতাংশ, এমনটাই জানান ডঃ ভিকে পাল। এখনই আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু না হলেও, সাধারণ মানুষকে সতর্ক ও প্রস্তুুত থাকতে হবে বলে তিনি জানান।