Baby S-400: পাক-চিন-তুরস্কের ড্রোন হামলা ঠেকাতে আসছে এক লক্ষ কোটি টাকার ‘বেবি এস-৪০০’

Baby S-400: ভারতের কাছে দূরপাল্লার, বড় মিসাইল হামলা ঠেকানোর জন্য নানান ডিফেন্স সিস্টেম রয়েছে। কিন্তু নয়া বেবি এস-৪০০ ডিফেন্স সিস্টেমের কাজ অন্যদের চেয়ে অনেকটাই আলাদা। ভবিষ্যতে যুদ্ধ হবে ড্রোনের মাধ্যম্যে। ভারতের এই ডিফেন্স সিস্টেম তৈরি হচ্ছে সেই হামলার আশঙ্কা থেকেই।

Baby S-400: পাক-চিন-তুরস্কের ড্রোন হামলা ঠেকাতে আসছে এক লক্ষ কোটি টাকার বেবি এস-৪০০
আরও শক্তিশালী হচ্ছে ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা

| Edited By: সঞ্জয় পাইকার

Jul 30, 2025 | 9:51 AM

আত্মনির্ভর ভারতের পথে আরও এক ধাপ এগোল দেশ। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে ‘কুইক রিঅ্যাকশন সারফেস টু এয়ার মিসাইল’ বা QRSAM সিস্টেম বানাচ্ছে ভারত। যাকে আদর করে সেনাবাহিনী ডাকছে ‘বেবি এস-৪০০’ বলে। নয়া মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম বানাতে ভারতের খরচ হচ্ছে এক লক্ষ কোটি টাকারও বেশি। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তির সামরিক সরঞ্জাম নির্মাণে এত টাকা বিনিয়োগে একটা জিনিস স্পষ্ট, ভবিষ্যতে শত্রুর মোকাবিলা করতে ভারত আর বিদেশি কোনও রাষ্ট্রের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে চায় না।

‘অপারেশন সিঁদুর’ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে, যুদ্ধে আক্রমণের চেয়েও বেশি জরুরি আত্মরক্ষা। অপারেশন চলাকালীন পশ্চিম ও উত্তর ভারতে লাগাতার ড্রোন ও মিসাইল দেগে গেছে পাকিস্তান। কিন্তু উপযুক্ত ডিফেন্স সিস্টেমের জন্য দেশের গায়ে হামলার আঁচ এসে লাগেনি। ভারতীয়দেরও কোনও ক্ষতি হয়নি। ‘অপারেশন সিঁদুর’ থেকে শিক্ষা নিয়ে ভারতের নিজস্ব শর্ট রেঞ্জ এয়ার ডিফেন্স দক্ষতা বাড়াতে চায় সেনা। তুলনামূলক নিচু দিয়ে উড়ে আসা হামলাকারী ড্রোন, প্রিসিশন গাইডেড মিসাইলের মতো হামলা রুখতে ভারতীয় সেনার দরকার QRSAM সিস্টেম। পাকিস্তানের কাছে থাকা চিনা এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমকে ‘জ্যাম’ করে মাত্র ২৩ মিনিটে গোটা অপারেশন ভারত শেষ করতে পেরেছিল। কিন্তু ভবিষ্যতে পাকিস্তান ও চিন এরকম আরও বেয়াদপি করবে ধরে নিয়েই আগেভাগেই নিজেদের অস্ত্রভাণ্ডারকে সুরক্ষিত রাখছে চায় দিল্লি। আর তাই দরকার QRSAM-এর মতো সিস্টেম যা একসঙ্গে একাধিক হামলা আটকাবে। বিশেষত এই নয়া সিস্টেমের লক্ষ্য, শত্রুর মিসাইল হামলা আটকে দেওয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনমতো অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সুবিধা থাকবে এতে। ফলে চিন ও পাকিস্তান সীমান্তে বারবার স্থান বদল করা যাবে এই ডিফেন্স সিস্টেমের। প্রয়োজনে বুঝে ভারতের স্ট্র্যাটেজিক লোকেশনে মোতায়েন করা যাবে ‘বেবি এস-৪০০’-কে।

নয়া ডিফেন্স সিস্টেমের পাল্লা হবে ৫ থেকে ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে। আগেই বলেছিলাম, মূলত নিচু দিয়ে উড়ে আসা আক্রমণ রুখে দেওয়াই হবে ‘বেবি এস-৪০০’-এর মূল লক্ষ্য। মাটির উপরে ১০ থেকে ১৪ কিলোমিটার পর্যন্ত উড়ে আসা যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার, ড্রোন ও ক্রুজ মিসাইলকে ধুলোয় মিশিয়ে দেবে এই ডিফেন্স সিস্টেম। এক একটি QRSAM মিসাইলের গতিবেগ হবে শব্দের চেয়ে ৪.৭ গুণ বেশি। এই মিসাইলগুলি তৈরিই হয়েছে খুব দ্রুত, চকিতে উড়ে আসা হামলাকে প্রতিহত করতে। সাড়ে চার মিটার লম্বা মিসাইলের ওজনও কম রাখা হয়েছে, ২৭০ কিলোগ্রামের আশপাশে। সিঙ্গল স্টেজ, সলিড রকেট জ্বালানির মতো নির্ভরযোগ্য ও বহু ব্যবহৃত জ্বালানি ব্যবহার হবে। ভবিষ্যতের ড্রোন যুদ্ধের কথা মাথায় রেখে ডিআরডিও তৈরি করছে অত্যাধুনিক এই অস্ত্র।

এই মিসাইলগুলি যে লঞ্চার থেকে ছাড়া হবে, সেটিরও বিশেষ বৈশিষ্ট রয়েছে। এক একটি মোবাইল লঞ্চার প্ল্যাটফর্মে ৬টি করে মিসাইল থাকবে। ঘুরতে পারবে ৩৬০ ডিগ্রি। ওজনে কম ও সহজে বহনযোগ্য করে হয়েছে দ্রুত এক জায়গা থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যেতে। পরীক্ষা নিরীক্ষার সময় এই ডিফেন্স সিস্টেম ‘সিঙ্গেল শট কিল’ বা এক বারে লক্ষ্যে আঘাতে সক্ষম হয়েছে ৮৫ শতাংশবার। সর্বক্ষণ এই ডিফেন্স সিস্টেম চারপাশের এলাকাকে স্ক্যান করে যাবে। সৌজন্যে এতে থাকা ‘অ্যাক্টিভ ইলেক্ট্রনিক্যালি স্ক্যানড অ্যারে বা AESA প্রযুক্তি। সবমিলিয়ে ২২টি রেজিমেন্ট তৈরি হবে ‘বেবি এস-৪০০’-এর। প্রথমে ৬টি রেজিমেন্ট সশস্ত্র সেনা ও বায়ুসেনার মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে। এক একটি রেজিমেন্টের খরচ ৬ হাজার কোটি টাকার আশেপাশে। প্রাথমিকভাবে পাক ও চিন সীমান্তে মোতায়েন করা হবে ‘বেবি-এস-৪০০’।