নয়া দিল্লি: ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চাপান-উতোর, ঠান্ডাযুদ্ধ লেগেই রয়েছে। এই বিরোধেই মাত্রা চড়িয়েছিল সিন্ধু নদের (Sindhu River) জলবন্টন নিয়ে দুই দেশের টানাপোড়েন। দীর্ঘ আলোচনার পর ১৯৬০ সালে তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ আয়ুব খানের উপস্থিতিতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সিন্ধু জল চুক্তি (Indus Water Treaty) স্বাক্ষরিত হয়। তারপরও চুক্তির পরও মেটেনি বিরোধ। এবার সেই সিন্ধু জল চুক্তি নিয়েই শুরু নতুন করে বিতর্ক। সম্প্রতিই এই চুক্তি নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আলোচনায় মধ্যস্থতা করার আগ্রহ দেখিয়েছিল বিশ্ব ব্যাঙ্ক (World Bank)। বৃহস্পতিবার তারই প্রতিক্রিয়ায় কড়া জবাব দিল ভারত (India)। সাফ জানিয়ে দেওয়া হল, সিন্ধু জলচুক্তি নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিরোধ মেটানোর জন্য তৃতীয় কোনও পক্ষের প্রয়োজন নেই।
বৃহস্পতিবার ভারতের তরফে একদিকে যেমন বিশ্ব ব্যাঙ্কের মধ্য়স্থতা করার ইচ্ছার বিরোধিতা করা হয়, তেমনই কোর্ট অব আরবিট্রেশনের (Court of Arbitration) সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। কেন্দ্রের জবাবে বলা হয়েছে, জম্মু-কাশ্মীরে কিষানগঙ্গা ও রাতেল হাইড্রো ইলেকট্রিক প্রকল্প নিয়ে নয়া দিল্লি ও ইসলামাবাদের মধ্যে আলোচনার বিষয়টি সম্পূর্ণ আলাদা। এই বিষয়ে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী বলেন, “আমাদের মনে হয় না দেশের হয়ে কোনও চুক্তিকে ব্যাখ্যা করার অবস্থানে রয়েছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক। ওটা দুই দেশের মধ্যে চুক্তি।”
প্রসঙ্গত, সম্প্রতিই পাকিস্তান সিন্ধু জল চুক্তি পুনর্বিবেচনা ও পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছিল। গত সপ্তাহেই ভারত তার সাপেক্ষে নোটিস পাঠায়। এরপরই বিশ্ব ব্যাঙ্কের তরফে দুই দেশের মধ্যে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, সিন্ধু জলচুক্তি নিয়ে পাকিস্তান যে পুনর্বিবেচনার দাবি জানায়, তার সাপেক্ষে ভারতও যথাযথ পদক্ষেপ করেছে।
নয়া দিল্লির তরফে জানানো হয়, বিশ্ব ব্যাঙ্ক কোর্ট অব আর্বিট্রেশনে গিয়েছে, তা নিয়েও ভারত অত্য়ন্ত ক্ষুণ্ণ। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী বলেন, “ভারতের তরফে সিন্ধু জল চুক্তির কমিশনার গত ২৫ জানুয়ারিই নোটিস জারি করেছে। এই নোটিসে পাকিস্তানকে সরাসরি সরকারের সঙ্গে চুক্তিভঙ্গের বিষয় নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আগামী ৯০ দিনের মধ্যে এই নোটিসের জবাব দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।”
অরিন্দম বাগচী আরও জানান, পাকিস্তানের তরফে ভারতের নোটিসের এখনও কোনও জবাব দেওয়া হয়নি। বিশ্ব ব্যাঙ্কের তরফে কী বলা হয়েছে বা এই চুক্তি নিয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া কী, সে বিষয়েও তিনি অবগত নন।