নয়া দিল্লি: ক্রমশ কাবুলের দিকে এগিয়ে আসছে তালিবান। একের পর এক প্রদেশ চলে যাচ্ছে তাদের দখলে। জানা যাচ্ছে, কাবুলের একেবারে কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে সন্ত্রাসবাদীরা। এমনকি আফগান সরকার কাছে তালিবানের কাছে নতিস্বীকার করার কথাও ভাবছে। সূত্রের খবর, ক্ষমতা ভাগাভাগির প্রস্তাব দিতে পারে আসরাফ ঘানি সরকার। তবে, জার্মানি, কাতার, তুরস্ক সহ অন্যান্য দেশের পাশাপাশি ভারতও আফগানিস্তানে অবিলম্বে সংঘর্ষবিরতির কথাই বলেছে। অবিলম্বে যাতে আফগানিস্তানে শান্তি স্থাপিত হয়, সেই বার্তাই দিয়েছে ভারত।
বৃহস্পতিবারই দোহায় পৌঁছেছেন ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব জেপি সিং। দোহায় একটি বৈঠকে অংশ নেন তিনি। কাতার সহ একাধিক দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছিলেন সেই বৈঠকে। সেখানে আফগানিস্তানকে আন্তর্জাতিক সাহায্য করা নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানা গিয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত ছিল জার্মানি, কাতার, তাজিকিস্তান, তুরষ্ক, তুর্কমেনিস্তান সহ মোট ১২ টি দেশের প্রতিনিধিরা। সূত্রের খবর আফগানিস্তান জুড়ে চলা তালিবানের বর্বরোচিত অত্যাচারে ইতি টানতে তালিবানকে ক্ষমতা ভাগাভাগির প্রস্তাব দিয়েছে আফগান সরকার। কাতারের মাধ্যমে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তালিবানকে।
আফগানিস্তানে তালিবানি শাসন জারি হলে এক টাকাও আর্থিক সাহায্য করবে না বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছে জার্মানি। জার্মানির বিদেশমন্ত্রী হাইকো মাস জানিয়েছেন, যদি আফগানিস্তানের দখল নেয় তালিবান ও সেখানে শরিয়া আইন বলবৎ হয় তাহলে এক পয়সাও দেবে না জার্মানি। প্রত্যেক বছর চার কোটি ৩০ লক্ষ ইউরো আর্থিক সাহায্য আফগানিস্থানে পাঠায় জার্মানি।
ইতিমধ্যেই একে একে আফগানিস্তানের সব বড় ও গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলি দখল হয়ে গিয়েছে। বাকি রয়েছে শুধু কাবুল। শুক্রবার আফগানিস্তানের কান্দাহার, হেরাত সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ শহর দখল করার পর কাবুলের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে গিয়েছে তালিবানরা। দেশের প্রায় ৯০ শতাংশই দখল করে নিয়েছে তালিবানিরা। শুরু হয়েছে নিরাপরাধদের ওপর অত্যাচারও। বাড়ি বাড়ি গিয়ে মেয়েদের প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে জঙ্গিদের সঙ্গে বিয়ে করতে বা তাদের যৌনদাসী হয়ে থাকতে। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশের তরফে তাদের প্রতিনিধিদেরও ফেরানোর কাজ শুরু হয়েছে। ভারত ইতিমধ্যেই মাজার-ই-শরিফের কনস্যুলেট বন্ধ করে কূটনীতিক ও ভারতীয় নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে এনেছে।
সম্প্রতিই পেন্টাগনের তরফে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে বলা হয়েছিল, যে হারে শক্তি প্রদর্শন করছে তালিবানরা, তাতে ৯০ দিনের মধ্যেই আফগানিস্তান দখল করে নেবে। কিন্তু এত দ্রুত যে গোটা দেশ জুড়ে বিস্তার করবে তালিবানরা, তা কল্পনাও করতে পারেনি আফগান বা মার্কিন সেনা।
এ দিকে, আফগানিস্তান ও তালিবানিদের মধ্যে সংঘর্ষের মাঝেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান আফগান প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘যতদিন আসরাফ ঘানি দেশের প্রেসিডেন্ট থাকবেন, ততদিন সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলি আফগানিস্তান প্রশাসনের সঙ্গে কথাই বলবে না।’ তাঁর দাবি, তালিবানরাই জানিয়েছে যে যতদিন আসরাফ ঘানি রয়েছেন, ততদিন ওরা কথা বলবে না। আরও পড়ুন: কাবুলের দোরগোড়ায় অপেক্ষারত তালিবান! রাতারাতি প্রতিনিধিদের দেশে ফেরাচ্ছে ব্রিটেন-আমেরিকা