
তিরুবনন্তপুরম: ইরান-ইজরায়েল সংঘাতের মধ্যেই ভারত মহাসাগরে নতুন কারসাজি শুরু করেছে চিন। নজরে এল চিনের সন্দেহজনক গতিবিধি। পড়শি দেশ থেকে যাতে কোনও বিপদ তৈরি না হয়, নজরদারির জন্য কেরলে এবার বসানো হল অত্যাধুনিক এবং উচ্চপ্রযুক্তি সম্পন্ন র্যাডার।
বিশ্বজুড়ে অস্থির পরিস্থিতির মধ্যেই চিন নানা কৌশলে ভারত মহাসাগরে নিজেদের গতিবিধি অনেকটাই বাড়িয়েছে। তাদের সেই “চুপি চুপি বিচরণ”কে নজরে রাখার জন্য এবার কেরলের কোঝিকোড়ের বেপোর সংলগ্ন চালিয়ামে আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন এবং শক্তিশালী র্যাডার বসাল ভারতীয় বায়ুসেনা।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং যখন চিনে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বৈঠকে সন্ত্রাসবাদ এবং পাকিস্তানের উস্কানি নিয়ে জোরাল আওয়াজ তুলছেন, ঠিক সেই মুহূর্তে ভারত মহাসাগরের উপরে চিনের যুদ্ধবিমান এবং যুদ্ধজাহাজের কর্মকাণ্ড সন্দেহজনকভাবে বাড়ছে। এই অবস্থায় কোনওভাবেই ভারত মহাসাগরের উপর থেকে নজরদারি ক্ষেত্রে ত্রুটি রাখতে নারাজ ভারতীয় বায়ুসেনা।
তামিলনাড়ুর দিকে শক্তিশালী এবং আধুনিক র্যাডার থাকলেও, কেরলের দিকে থাকা র্যাডার ছিল পুরনো প্রযুক্তির। কিন্তু চিনের সন্দেহজনক গতিবিধি ভারতীয় বায়ুসেনার নজরে আসতেই তড়িঘড়ি এই আধুনিক র্যাডার বসানো হল।
ভারতীয় বায়ুসেনা সূত্রে খবর, ইন্টিগ্রেটেড এয়ার কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেমের আওতায় দক্ষিণ ভারতের দু’দিকে থাকা আরব সাগর, বঙ্গোপসাগর এবং ভারত মহাসাগরের উপরে যাবতীয় গতিবিধির ওপরে সহজেই নজর রাখতে পারবে এই আধুনিক র্যাডার। ৩৬০ ডিগ্রি ব্যবস্থা সম্পন্ন এই র্যাডার এতটাই শক্তিশালী যে সামান্য ছোট নৌকা থেকে বড় যুদ্ধজাহাজ, এমনকী যুদ্ধবিমান সহজেই ট্র্যাক করতে পারবে।
চিন যেভাবে নিজেদের বেল্ট তৈরি করে ভারতকে ঘেরার চেষ্টা করছে, তা আটকানোর জন্যই দক্ষিণ ভারতে নিজেদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং নজরদারির ব্যবস্থাকে আরও নিখুঁত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বায়ুসেনার আধিকারিকরা।
চিন ইতিমধ্যেই পাকিস্তানের গদর এবং শ্রীলঙ্কার হাম্মানতোতা অর্থনৈতিক উন্নয়নের নামে ৯৯ বছরের লিজ নিয়ে রেখেছে। মূলত অর্থনৈতিক উন্নয়নের নামে এই বন্দরগুলিতে নিজেদের নজরদারির কাজে ব্যবহৃত জাহাজ এবং গুপ্তচর জাহাজ মাঝেমধ্যেই এনে মোতায়েন করছে। কিন্তু চিনের আসল উদ্দেশ্য হল দু’টি সাগর এবং একটি মহাসাগরের উপরে সম্পূর্ণ দখল নেওয়া এবং ভারতের উপরে নজরদারি চালানো।
সেই কারণেই ভারত ইতিমধ্যেই ভারত মহাসাগর এবং বঙ্গোপসাগরে অত্যাধুনিক এবং ব্রহ্মস সুপারসনিক মিসাইল ক্ষমতাসম্পন্ন যুদ্ধজাহাজ এবং ডুবোজাহাজ মোতায়ন করেছে। নজরদারির ক্ষেত্রে র্যাডারের প্রয়োজনীয়তা দীর্ঘদিন ধরে ছিল। সেই র্যাডার এবার কেরলের মাটিতে বসিয়ে শ্রীলঙ্কার হাম্বানতোতা বন্দর এবং পাকিস্তানের গদর বন্দরকে নিজেদের নজরদারির আওতায় নিয়ে এল ভারতীয় বায়ুসেনা।