
নয়া দিল্লি: আরও মজবুত হচ্ছে ভারতের সুরক্ষা বেষ্টনী। আকাশ সুরক্ষায় এবার ১০টি দেশীয় ফাইটার স্কোয়াড্রন তৈরি করার কথা ঘোষণা করল ভারতীয় বায়ুসেনা। আকাশ প্রতিরক্ষায় এই স্কোয়াড্রন তৈরি করা হবে বলে ভারতীয় বায়ুসেনা সূত্রে খবর। একইসঙ্গে প্রজেক্ট কুশা বজায় থাকছে বলেও বায়ুসেনার তরফে জানিয়ে দেওয়া হল।
ভারতীয় সেনার সুদর্শন চক্র অর্থাৎ এস-৪০০ (S -400) কেনা হলেও প্রজেক্ট কুশা থেকে পিছিয়ে আসছে না ভারতীয় বায়ুসেনা। জানা গিয়েছে, প্রজেক্ট কুশা চালু থাকছে। আসছে ১০টি দেশি স্কোয়াড্রন। অর্থাৎ নিজের দেশেই তৈরি অত্যাধুনিক এয়ার-ডিফেন্স ও ফাইটার ক্ষমতার নতুন যুগ শুরু হতে চলেছে। প্রজেক্ট কুশায় ভারতীয় বায়ুসেনার শক্তি বাড়বে দ্বিগুণ, দেশীয় প্রতিরক্ষা শিল্পও পাবে বিরাট গতি।
প্রজেক্ট কুশা ভারতের দীর্ঘ-পাল্লার SAM ব্যবস্থার পরবর্তী ধাপ। ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ডিআরডিও (DRDO) বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বদেশি আকাশ প্রতিরক্ষা প্রকল্প তৈরিতে নিয়োজিত। এরই নাম প্রজেক্ট কুশা। এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য একটি দীর্ঘ-পাল্লার সারফেস টু এয়ার মিসাইল (Surface-to-Air Missile) সিস্টেম প্রস্তুত করা, যা আকাশপথে বিভিন্ন ধরনের হামলা প্রতিহত করতে পারবে।
প্রজেক্ট কুশা-তে থাকবে একটি মাল্টি-ইনটারসেপ্টর ভিত্তিক ব্যবস্থা, যার অন্তর্গত থাকবে তিনটি পৃথক ইন্টারসেপ্টর —
এই সিস্টেমের M2 ও M3 ইন্টারসেপ্টরের জন্য উন্নত মোবাইল লঞ্চার ডিজাইন ও তৈরি করছে ডিআরডিও (DRDO)-র ভেহিকেল রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এসটাবলিশমেন্ট (Vehicle Research and Development Establishment)। লঞ্চারটিতে মাল্টি-টিউব কনফিগারেশন থাকবে এবং দ্রুত মোতায়েন ও রিলোড যোগ্য হবে। এটি উচ্চ গতিসম্পন্ন ট্র্যাকড বা হুইলড মোবিলিটি প্ল্যাটফর্মে ভিত্তি করে নির্মিত হতে পারে।
প্রজেক্ট কুশা মূলত ভারতের বর্তমান এবং ভবিষ্যতের বিমান, ড্রোন, ক্রুজ মিসাইল, এবং কৌশলগত ব্যালিস্টিক মিসাইল হুমকির মোকাবিলায় স্তরীয় আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষমতা (layered air defence capability) গড়ে তোলার একটি ধাপ। এই প্রকল্পটি ইজরায়েলি বা রাশিয়ান প্রযুক্তির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্ভরশীলতা বাড়াবে।
প্রজেক্ট কুশা-র ইন্টারসেপ্টর ও সেন্সর আর্কিটেকচার এমনভাবে ডিজাইন করা হচ্ছে যাতে এটি স্টেলথ যুদ্ধবিমান (low-RCS stealth aircraft) এবং হাই স্পিড হাইপারসনিক গ্লাইড ভেহিকল (high-speed hypersonic glide vehicles) বা মিসাইলের মতো বিপদও শনাক্ত ও ধ্বংস করতে সক্ষম হবে। এর র্যাডার ও ট্র্যাকিং ব্যবস্থায় উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহৃত হবে। ইন্টারসেপ্টরগুলিতে থাকবে উচ্চ গতির কাইনেটিক কিল ভেহিকল ও অ্যাকটিভ র্যাডার হোমিং (Active Radar Homing) প্রযুক্তি।
বর্তমানে M1 interceptor ইতিমধ্যেই পরীক্ষার পর্বে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে। M2 ও M3 এখনও তৈরির পর্যায়ে রয়েছে। VRDE-এর লঞ্চার সিস্টেমও সেই দিকেই এগোচ্ছে।