নয়া দিল্লি: দেশের প্রতিরক্ষার দায়িত্বে রয়েছে তিন বাহিনী- নৌ, বায়ু ও সেনা বাহিনী। বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী সেনাবাহিনী ভারতের। এবার বায়ুসেনাকেও আরও সুরক্ষিত করার উদ্যোগ নিল কেন্দ্রীয় সরকার। বায়ুসেনার যুদ্ধবিমানকে কোনও দুর্ঘটনা বা বিপদ থেকে রক্ষা করতে সংযোজন করা হচ্ছে এক নতুন ব্যবস্থার। বায়ুসেনার সহায় হতে চলেছে এয়ার টু এয়ার ডিজিটাল ম্যাপ। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতেই তৈরি হবে এই ডিজিটাল ম্যাপ।
কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, বায়ুসেনার যুদ্ধবিমানগুলিতে এক ধরনের নতুন ডিজিটাল ম্যাপ সংযোজন করা হবে। উড়ানের সময় ককপিটের ডিসপ্লে বোর্ডে চোখ রাখলেই আকাশপথের যাবতীয় তথ্য পেয়ে যাবেন পাইলট। আকাশপথে যদি কোনও বাধা বিপত্তি বা বিপদের আশঙ্কা থাকে, তা ম্যাপে ফুটে উঠবে।
উন্নত ন্যাভিগেশন সিস্টেম কাজে লাগিয়ে তৈরি করা হয়েছে এয়ার টু এয়ার ডিজিটাল ম্যাপ। উন্নত যুদ্ধবিমানের সেন্সরের মতোই এটি নিখুঁত তথ্য দেবে পাইলটকে। তবে এয়ার-টু এয়ার ডিজিটাল ম্যাপের কাজ এখানেই শেষ নয়। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে এই ম্যাপ পাইলটকে নিয়মিত অ্যালার্ট দেবে। পাইলট যাতে কোনওভাবেই পথ হারিয়ে না ফেলেন বা মুখোমুখি সংঘর্ষ এড়াতে পারেন, তা নিশ্চিত করতেই অ্যালার্ট দেওয়ার প্রযুক্তি থাকবে এই ম্যাপে।
ডিজিটাল ম্যাপ হলেও এটা দেখতে অনেকটা বড় ব্যাটারির মতো। এই ডিজিটাল ম্যাপের ওজন ১২ কেজি। একবার চার্জ দিলে ৬ থেকে সাড়ে ৬ ঘণ্টা কাজ করবে ম্যাপ।
আপাতত প্রথম ধাপে তেজসের মতো যুদ্ধবিমানে ইনস্টল করা হবে এই ডিজিটাল ম্যাপ। ভারতীয় সেনার অন্যতম সেরা যুদ্ধবিমান সুখোই এমকে ৩০-এও পরীক্ষামূলক ভাবে এর ব্যবহার হয়েছে। আগামী কয়েক মাসে চেতক, চিতা, প্রচন্ড ও কিরণের মতো লাইট কমব্যাট হেলিকপ্টারেও ডিজিটাল ম্যাপ বসবে।
দেশীয় প্রযুক্তিতে এটি তৈরি করেছে হিন্দুস্তান অ্যারোনেটিক্স লিমিটেড। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার দাবি, আগামী ২ বছরে দেশের সবকটি যুদ্ধবিমানে এই ম্যাপ কাজ করবে। হ্যাল সেভাবেই এগোচ্ছে।
প্রসঙ্গত, আমেরিকা, চিন, রাশিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি ও ইজরায়েলের বায়ুসেনার হাতে রয়েছে এই ধরনের এয়ার টু এয়ার ডিজিটাল ম্যাপ। ২০১৭ সালে তত্কালীন বায়ুসেনা প্রধান বিএস ধানোয়া ভারতে এই ধরনের ডিজিটাল ম্যাপ তৈরির প্রস্তাব দেন। এয়ার মার্শাল বসন্ত কলিতার নেতৃত্ব প্রাথমিক কাজ শুরু করে বায়ুসেনা। পরে এগিয়ে আসে হ্যাল ও আরও কয়েকটি সংস্থা।