
পাশ করেছে ইঞ্জিনিয়ারিং। অর্থাৎ হাতে রয়েছে বি.টেক বা এম.টেক ডিগ্রি। কিন্তু ইঞ্জিনিয়ারিং নয়, তিনি মন দিয়ে বসে রয়েছেন মাইক্রোফোন বা ক্যামেরার লেন্সকে। গত কয়েক দশক ধরে মনে করা হত ইঞ্জিনিয়ার হওয়া মানেই সাফল্যের শিখরে পৌঁছে যাওয়া। কিন্তু আজ সেই পথই ছেড়ে দিচ্ছেন বহু তরুণ-তরুণী। আর আজ এই প্রশ্নটিই বড় হয়ে উঠছে, কেন এমন হচ্ছে?
কেউ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ রুপোর পদক পেয়েছিলেন। আর তারপর ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে মাইক্রোফোনকেই বেছে নেন। আজ সেই ব্যক্তি একজন সফল RJ ও নিউজ প্রোডিউসার। একই পথে হেঁটেছেন আরও অনেকে। কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হয়ে কেউ আবার অ্যানালিটিক্স বা কনসাল্টিং-কে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন।
এর পেছনে মূল কারণ তিনটি। প্রথমত, বহু কলেজের পাঠ্যক্রম বাস্তবের চাহিদা থেকে বহু যোজন পিছিয়ে। পড়ুয়ারা যখন পুরোনো ফর্মুলা মুখস্থ করছে, ইন্ডাস্ট্রি তখন সফটওয়্যার ও অটোমেশনে কাজ করছে। আর এই ফারাকের কারণেই চাকরি পেতেই অসুবিধা হন অনেক নবীন ইঞ্জিনিয়ার।
দ্বিতীয়ত, চাকরির সুযোগের অভাব। অনেক সময় অনেক সংস্থা আইআইটি বা এনআইটির মতো শীর্ষ প্রতিষ্ঠান অন্য কলেজে ক্যাম্পাসিংয়ের জন্য যায় না। ফলে ভালো ছাত্রছাত্রীরাও সঠিক সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়।
তৃতীয়ত, চাহিদা ও জোগানের বিস্তর ফারাক। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ ইঞ্জিনিয়ার পাশ করলেও, ভালো বেতনের কোর ইঞ্জিনিয়ারিং চাকরির সংখ্যা সীমিত। এর ফলে বাধ্য হয়েই অনেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে চাকরির খোঁজে চলে যাচ্ছেন।
তবে এর একটি ইতিবাচক দিকও আছে। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষা কিন্তু শুধু ফর্মুলা মুখস্থ করা নয়। যে কোনও কঠিন সমস্যা সমাধানের মানসিকতা তৈরি করাও কিন্তু ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কোর্সেই থাকে। আর এই দক্ষতাই অনেককে নতুন পথে সফল হতে সাহায্য করছে। ডিগ্রিটা হয়তো পথ দেখাচ্ছে, কিন্তু গন্তব্য তাঁরা নিজেরাই বেছে নিচ্ছেন।