নয়া দিল্লি: ৫০ হাজার থেকে এবার লাখের গণ্ডির কাছাকাছি পৌঁছে গেল দেশের দৈনিক করোনা সংক্রমণ(COVID-19)। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের (Union Health Ministry) তথ্য অনুযায়ী, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৯০ হাজার ৯২৮ জন। গতকালই এই সংখ্য়াটা ছিল ৫৮ হাজার ৯৭। একদিনেই সংক্রমণ প্রায় ৫৫ শতাংশ বেড়ে ৯০ হাজারে পৌঁছে গেল। সামান্য কমেছে সুস্থতার হারও। বর্তমানে দেশে সুস্থতার হার ৯৭.৮১ শতাংশ। তবে এখনও মোট সংক্রমণের ১ শতাংশের নীচে রয়েছে সক্রিয় রোগীর সংখ্য়া, যা কিছুটা আশাজনক।
বছরের শেষভাগ থেকে সংক্রমণের যে বৃদ্ধি শুরু হয়েছিল, তা নতুন বছরে দু-তিনগুণ বেশি গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সংক্রমণের এই বৃদ্ধির জন্য ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টই দায়ী বললে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রক ও নীতি আয়োগের সদস্যরা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের দৈনিক সংক্রমণের হার ৬.৪৩ শতাংশ। সাপ্তাহিক সংক্রমণের হার ৩.৪৭ শতাংশ।
অন্যদিকে, এতদিন দেশে সুস্থতার হার ৯৮ শতাংশ থাকলেও, এদিন তা কমে ৯৭.৮১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৯ হাজার ২০৬জন। বর্তমানে দেশে মোট সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর সংখ্য়া ৩ কোটি ৪৩ লক্ষ ৪১ হাজার ৯। দেশের সক্রিয় রোগীর সংখ্য়া এখনও মোট সংক্রমণের ১ শতাংশের নীচেই রয়েছে। বর্তমানে দেশে সক্রিয় রোগীর সংখ্য়া ২ লক্ষ ৮৫ হাজার ৪০১। সক্রিয় রোগীর হার ০.৮১ শতাংশ। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় মৃৃত্যু হয়েছে ৩২৫ জনের।
করোনার পাশাপাশি দেশে ওমিক্রন সংক্রমণের হারও বেড়েছে। বর্তমানে দেশে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ২৬৩০। দেশের মধ্যে সর্বাধিক আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে মহারাষ্ট্র থেকেই, সেখানে এখনও অবধি ৭৯৭ জন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। সংক্রমণের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে দিল্লি, সেখানে ৪৬৫ জন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে।
দেশের মধ্যে ইতিমধ্যেই ২৬টি রাজ্য়ে ছড়িয়ে পড়েছে ওমিক্রন। ওমিক্রনে প্রথম মৃত্যুও হয়েছে রাজস্থানে। সেখানে ৭৩ বছর বয়সী এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে করোনার এই অতি সংক্রামক নতুন স্ট্রেনে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, ওই ব্যক্তি সম্পূর্ণ টিকাপ্রাপ্ত ছিলেন এবং তাঁর কোনও ভ্রমণের ইতিহাসও ছিল না।
দেশের করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির একটি বড় অংশই মহারাষ্ট্র থেকে হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সে রাজ্যে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২৬ হাজার ৫৩৮ জন। অন্যদিকে, দ্বিতীয় স্থানেই রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ একলাফে ১৪ হাজারে পৌঁছেছে। সংক্রমণ বাড়ছে দিল্লিতেও। সেখানে একদিনেই আক্রান্তের সংখ্য়া দ্বিগুণ হয়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫৪৮১, বুধবারই তা দ্বিগুণ হয়ে দাঁড়ায় ১০,৬৬৫-এ।
করোনা ও ওমিক্রন সংক্রমণ বাড়তেই একাধিক রাজ্যে জারি করা হয়েছে বিধিনিষেধ। দিল্লি ও কর্নাটকে সপ্তাহ শেষে কার্ফু জারি করা হয়েছে। নৈশ কার্ফু জারি করা হয়েছে একাধিক রাজ্যে। মুম্বইতে দৈনিক সংক্রমণ ২০ হাজারের গণ্ডি পার করলেই লকডাউন জারি করা করা হবে বলে জানানো হয়েছে। তামিলনাড়ুতেও গতকাল নতুন নির্দেশিকা জারি করে নৈশ কার্ফু, রবিবার করে শাটডাউনের মতো একাধিক বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে।