ইন্দোর: তাঁর গায়ে ছিল কনের সাজ। পরণে ছিল শাড়ি। মুখে লিপস্টিক। দুই হাত ভরা ছিল সবুজ চুড়িতে, কপালে ছিল টিপ। এছাড়া, তাঁর হাত ছিল পিছমোড়া করে বাঁধা। বাঁধা ছিল চোখও। শনিবার (১৮ মে) সকালে, মধ্য প্রদেশের ইন্দোরের এক হোস্টেলের ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ২২ বছর বয়সী এক যুবকের পচা-গলা দেহ। সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছিল দেহটি। সবথেকে আশ্চর্যজনক ঘটনা হল, ঘরের দরজাটি ভিতর থেকে তালাবন্ধ ছিল। তাই ওই যুবক আত্মহত্যা করেছেন, নাকি, তাঁকে কেউ খুন করেছে, তা নিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে। এই বিস্ময়কর ঘটনাটি ঘটেছে ইন্দোরের ভাওয়ার কুয়ান থানা এলাকার শান্তি নগরে।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত যুবকের নাম পুনিত দুবে। আদতে তিনি মধ্য প্রদেশের রাইসেন জলার বাসিন্দা। তবে, গত তিন বছর ধরে তিনি ইন্দোরেই থাকেন। মধ্য প্রদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। হোস্টেলের ঘরে তাঁর সঙ্গে আরও এক যুবক থাকতেন। গত সপ্তাহে তাঁর রুমমেট অন্য এক জায়গায় গিয়েছিলেন। ফলে, সেই থেকে ঘরে একাই থাকছিল পুনিত। পুনিতের বাবা, ত্রিভুবন দুবে জানিয়েছেন, দুদিন আগে, অর্থাৎ, বুধবার রাতে শেষবার পুনিতের সঙ্গে তাঁর মায়ের কথা হয়েছিল। পুনিত কোনও অঘটন ঘটাতে পারে, তার কোনও ইঙ্গিত সেই সময় তাঁরা পাননি। পুলিশের অনুমান, দুদিন আগেই মৃত্যু হয়েছিল পুনিতের।
ত্রিভুবন দুবে জানিয়েছেন, বুধবার মায়ের সঙ্গে কথা হওয়ার পর, তাঁরা আর পুনিতকে ফোন করেননি। ভেবেছিলাম পুনিত তাঁর কোচিং ক্লাস নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। তাই বিরক্ত করবেন না। তবে, শুক্রবার তাঁকে বারবার ফোন করেও পায়নি তাঁর বাড়ির লোক। তাঁর মোবাইল ফোনটি বন্ধ ছিল। তারপর পুনিতের বাড়ির লোক হোস্টেলে ফোন করেছিলেন। হোস্টেলের কর্মীরা গিয়ে পুনিতকে তাঁর ঘরে মৃত অবস্থায় পেয়েছিলেন। এরপর হোস্টেলের কর্মীরাই পুলিশকে খবর দিয়েছিলেন। খবর দেওযা হয় পুনিতের বাড়িতেও। পুলিশ এসে পুনিতের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
পুলিশ জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত এই ঘটনা খুন না আত্মহত্যা, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। পুনিতের ঘর থেকে কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি। অথচ, ঘরের দরজা ভিতর থেকে তালাবন্ধ ছিল। বাইরের কারও পক্ষে তা করা সম্ভব নয়। কেন মৃত্যুর সময় তার পরণে মহিলাদের পোশাক ছিল, তাও ভাবাচ্ছে পুলিশকে।