IPC Section 124A: রাষ্ট্রদ্রোহ আইন নিয়ে আলোচনার চূড়ান্ত পর্যায়ে সরকার, সুপ্রিম কোর্টকে জানাল কেন্দ্র

Govt re-examining sedition law: ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪-এর ক ধারা অর্থাৎ রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের ধারাটি পুনঃবিবেচনা করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে কেন্দ্র। এই বিষয়ে আলাপ-আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। সোমবার (১ মে), সুপ্রিম কোর্টকে জানালেন ভারতের অ্যাটর্নি জেনারেল আর বেঙ্কটারমানি।

IPC Section 124A: রাষ্ট্রদ্রোহ আইন নিয়ে আলোচনার চূড়ান্ত পর্যায়ে সরকার, সুপ্রিম কোর্টকে জানাল কেন্দ্র
সুপ্রিম কোর্টে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনকে চ্যালেঞ্জ করে জমা পড়েছে ১৬টি আবেদন

| Edited By: অমর্ত্য লাহিড়ী

May 01, 2023 | 3:42 PM

নয়া দিল্লি: ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪-এর ক ধারা অর্থাৎ রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের ধারাটি পুনঃপরীক্ষা করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে কেন্দ্র। সোমবার (১ মে), সুপ্রিম কোর্টকে জানালেন ভারতের অ্যাটর্নি জেনারেল আর বেঙ্কটারমানি। তিনি জানিয়েছেন, ১২৪-এর ক ধারা পর্যালোচনার বিষয়ে আলাপ-আলোচনা বর্তমানে চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ব্রিটিশ আমলে এই আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল। এই আইনের ধারায় রাষ্ট্রদ্রোহিতাকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে এবং রাষ্ট্রদ্রোহকে অপরাধ বলে গন্য করা হয় এবং দোষী সাব্যস্ত হলে কঠোর সাজার বিধান রয়েছে। ঔপনিবেশিক যুগের এই আইনের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে একগুচ্ছ আবেদন রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের সামনে। এদিন এই মামলার শুনানিতে এই বিতর্কিত আইনের বিধান পর্যালোচনা করার বিষয়ে কেন্দ্রের নেওয়া পদক্ষেপগুলি আদালতে জানান আর বেঙ্কটারমানি। অগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে ফের এই মামলার শুনানি হবে।

প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি জেবি পর্দিওয়ালার বেঞ্চে এই মামলার শুনানি চলছে। এই আইনের বিধানকে চ্যালেঞ্জ করে সব মিলিয়ে ১৬টি আবেদন রয়েছে। ২০২২ সালের ৩১ অক্টোবর, শীর্ষ আদালত রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের বিধান ফের পর্যালোচনা করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে এই বিষয়ে আলোচনা হতে পারে, দাবি করে অতিরিক্ত সময় চেয়েছিল কেন্দ্র। ‘উপযুক্ত পদক্ষেপ’ নেওয়ার জন্য ১ মে পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল। এদিন, অ্যাটর্নি জেনারেল সংসদের বাদল অধিবেশন শেষ না পর্যন্ত সময় চেয়ে নেন। কেন্দ্রের এই দাবি মেনে নিয়েছে আদালত। ২০২২-এর ১১ মে কেন্দ্রের বিবেচনা চলাকালীন এই আইন প্রয়োগ স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। এই আইনের আওতায় এফআইআর দায়েরের পাশাপাশি তদন্ত এবং বিচারও স্থগিতও রাখার নির্দেশ দিয়েছিল। তবে, এই আইনের ধারায় বন্দি থাকা ব্যক্তিদের তাদের সাজা চ্যালেঞ্জের অধিকার দেওয়া হয়েছিল।

রাষ্ট্রদ্রোহ আইন কী?

ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪-এর ক ধারায় রাষ্ট্রদ্রোহকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। এই আইনে বলা হয়েছে, যদি কোনও ব্যক্তি সরকারবিরোধী কিছু লেখে বা বলে বা এই ধরণের কোনও লেখা বা কথাকে সমর্থন করে, জাতীয় প্রতীকের অবমাননা করে বা সংবিধানের অবমাননা করে বা করার চেষ্টা করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪-এর ক ধারায় রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা যেতে পারে। এছাড়া কোনও ব্যক্তি যদি কোনও দেশবিরোধী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধেও রাষ্ট্রদ্রোহের মামলাও দায়ের করা যেতে পারে। কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হলে, তিনি আর সরকারি চাকরির জন্য আবেদন করতে পারেন না। পাশাপাশি জামিনও পাবেন না। অপরাধের ধরন অনুযায়ী তিন বছরের মেয়াদ থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। এছাড়াও জরিমানা হতে পারে।

১৮৭০ সালে ব্রিটিশ সরকার এই আইন কার্যকর করেছিল। সেই সময়, ব্রিটিশ সরকারের বিরোধিতা করলেই এই আইনের বিধান ব্যবহার করা হত। তবে, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর, কোনও গণতান্ত্রিক দেশে এই আইনের কোনও যৌক্তিকতা আছে কি না, এই নিয়ে বারংবার প্রশ্ন উঠেছে। আইনটির সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। মাস খানের আগে লাহোর হাইকোর্ট পাকিস্তানে এই আইন বাতিল বলে ঘোষণা করেছিল। এখন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট কী রায় দেয়, সেটাই দেখার।