ইশরত জাহান ‘ভুয়ো’ এনকাউন্টার মামলায় বাকি ৩ পুলিশ আধিকারিককেও মুক্তি দিল সিবিআই কোর্ট
গুজরাট পুলিশ পাল্টা দাবি করেছিল, ইশরত ও বাকি ৩ জন গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে খুন করতে এসেছিল।
আহমেদাবাদ: ইশরত জাহান (Ishrat Jahan) ‘ভুয়ো’ এনকাউন্টার মামলায় ৩ পুলিশ আধিকারিককে বুধবার মুক্তি দিল স্পেশাল সিবিআই কোর্ট। ২০০৪ সালের এই ঘটনায় অভিযুক্ত ছিলেন আইপিএস জিএল সিঙ্ঘল, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক তরুণ বারোট ও অঞ্জু চৌধরি। তাঁরা গত ২০ মার্চ আদালতে মুক্তির আবেদন করেছিলেন। সেই মামলায় বুধবার ৩ জনকেই মুক্তি দিল স্পেশাল সিবিআই কোর্ট। ২০ মার্চ আবেদন করার সময় ৩ পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছিলেন, যেহেতু সরকার এই মামলায় তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নিয়ে এগোচ্ছে না। তাই আগে যেভাবে বাকি ৩ পুলিশ আধিকারিক মুক্তি পেয়েছিলেন, সেভাবেই তাঁদের মুক্তি দেওয়া হোক।
২০০৪ সালে জুন মাসে পুলিশ আধিকারিক ডি জি বানজারার নেতৃত্বে আহমেদাবাদে ডিটেকশন অব ক্রাইম ব্রাঞ্চ ইশরত জাহান ও আরও ৩ জনকে গুলি করে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। গুজরাট পুলিশ পাল্টা দাবি করেছিল, ইশরত ও বাকি ৩ জন গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে খুন করতে এসেছিল। পুলিশ দাবি করেছিল গোয়েন্দা বিভাগ থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, এর মধ্যে দু’জন পাকিস্তানের নাগরিক ছিল। ইশরতের মৃত্যুর পর তাঁর মা শামিমা কাইজার গুজরাট হাইকোর্টে এই ভুয়ো হত্যা মামলার তদন্ত দাবি করেন।
এই ঘটনায় সিবিআই চার্জশিট ফাইল করে গুজরাটের ৭ পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে। সেখানে বানজারা, এনকে আমিন ছাড়াও নাম ছিল পিপি পান্ডে, জিএল সিঙ্ঘল, তরুণ বারোট, অনুজ চৌধরি ও জেজি পারমার। তাঁদের বিরুদ্ধে অপহরণ, প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ উঠেছিল। এর মধ্যে আগেই বানজারা, পিপি পান্ডে ও আমিনকে মুক্তি দিয়েছিল সিবিআইয়ের স্পেশাল কোর্ট। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রাণ হারিয়েছেন জেজি পারমার।
জিএল সিঙ্ঘল, তরুণ বারোট ও অঞ্জু চৌধরিকে মুক্তি দেওয়ার পর কার্যত এই মামলার নিস্পত্তি হয়ে গেল, যদি না ফের সিবিআই আদালতের কাছে কোনওরূপ আবেদন করে। প্রসঙ্গত, এর আগেও বাকি পুলিশ আধিকারিকরা যখন মুক্তি পেয়েছিলেন, তখন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করেনি সিবিআই। বুধবার রায় ঘোষণার সময় সিবিআই বিচারপতি ভিআর রাভাল জানিয়েছেন, এমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি যেখান থেকে বলা যায় যে ৪ জন গুজরাট পুলিশের হাতে প্রাণ হারিয়েছিলেন তারা সন্ত্রাসবাদী নয়। এই মামলার রায় ঘোষণার সময় বিচারক জানিয়েছেন, সিবিআই যে তথ্য পেশ করেছে তা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক যাচাই করে পাঠিয়েছে বলেই ধরে নিয়ে এই রায় দেওয়া হয়েছে। কোনও শুনানি ছাড়াই এই রায় হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
জানা গিয়েছিল, ২০০৪ সালের ১৫ জুন আহমেদাবাদের কোতরপুর ওয়াটারওয়ার্কসের কাছে গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন ইশরত জাহান, প্রণেশ পিল্লাই, আমজাদ আি ও জিশান জোহর। পুলিশ দাবি করেছিল ৪ জনই লস্কর-ই-তৈবা জঙ্গি সংগঠনের সদস্য। নরেন্দ্র মোদীকে খুন করার ছক ছিল তাদের বলেও অভিযোগ উঠেছিল।
আরও পড়ুন: ‘হালাল’ নাকি ‘ঝটকা’, মাংস কাটার পদ্ধতি জানাতে হবে ক্রেতাকে, নির্দেশ পুরসভার