
কলকাতা: দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের বিগ্রহর নিমকাঠ কোথা থেকে এসেছে, তা নিয়ে বিতর্ক জন্ম নিয়েছে। পুরীর মন্দিরের সেবায়ত রাজেশ দৈতাপতি দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিলেন। তিনি প্রথম দাবি করেছিলেন, ২০১৫ সালে পুরীর মন্দিরে নবকলেবরে ব্যবহৃত পবিত্র নিম কাঠের অবশিষ্ট অংশ দিয়েই বানানো হয়েছে দিঘায় জগন্নাথের বিগ্রহ। তাঁর এই দাবি ঘিরে হইচই সৃষ্টি হয়। পরে আবার তিনিই ওড়িশায় পৌঁছে সম্পূর্ণ বিপরীত মন্তব্য করেন। নিম কাঠ বিতর্কে এবার ইতি টানল ওড়িশা সরকারই। আইনমন্ত্রী স্বীকার করে নিলেন, ভুলবশত বলেছিলেন দ্বৈতাপতি।
সোমবার মুর্শিদাবাদে যাওয়ার আগেই নিম কাঠ বিতর্কে মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বলেন, “মা কালী বাড়ি স্কাইওয়াক করলে, প্রশ্ন ওঠে না, দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে স্কাইওয়াক করলে প্রশ্ন ওঠে না, জগন্নাথ ধাম করলে খুব গায়ে লেগেছে না!” তিনি বলেন, “বলা হচ্ছে, নিম গাছের কাঠ চুরি করেছি। আরে আমার বাড়িতে চারটে নিম গাছ রয়েছে। কটা দরকার জিজ্ঞাসা করুন। আমাদের চুরি করতে হয় না। নিম কাঠ চুরি করে জগন্নাথ ধাম করেছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই অবস্থা হয়নি। আমাদের মূর্তি ছিল মার্বেলের ছিল, ওটা দ্বৈতাপতি নিয়ে এসেছিলেন। তাঁকে কাল ডাকা হয়েছিল, আমি শুনেছি। উনি বলেছিলেন, এটা আমি অন্য জায়গা থেকে দিয়েছি। তাঁকে আবার প্রশ্নও করা হয়েছিল, তুমি কেন পুজো করতে গিয়েছিলেন? নোটিফিকেশন দিয়েছে, কেউ যাবে না। এত গায়ে লাগছে কেন?”
ঘটনাক্রমে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের নিমকাঠ বিতর্কে ইতি টেনেছে ওড়িশা সরকার। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের বাড়তি কাঠ থেকে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের মূর্তি বানানো- এই বিতর্কে জল ঢাললেন সে রাজ্যের আইনমন্ত্রী। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, এটা কোনওভাবেই সম্ভব নয়। দ্বৈতাপতি মুখ ফসকে এটা বলে দিয়েছেন।
ওড়িশার আইনমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ চৌহান বলেন, “পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের বাড়তি কাঠ থেকে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের মূর্তি বানানো, এই ধরনের বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা। ওখানকার মহারানা সেবক যে সমাজ আছে, তাদের সঙ্গে কথা বলার পর, এটা সামনে এসেছে, কাঠের যতটা অংশ বাকি রয়েছে, তা নিয়ে নতুন করে কোনও মূর্তি বানানো অসম্ভব। দ্বৈতাপতি সমাজের সেক্রেটারি যে তদন্ত করেছেন, তাঁরাও স্বীকার করে নিয়েছেন যে, যেটা বলা হয়েছিল, সেটা ভুলবশত হয়েছে।”