
নয়া দিল্লি: কাশ্মীরে ছাব্বিশ জন পর্যটককে নৃশংসভাবে খুন। তারপরই কড়া বার্তা দিয়েছিল ভারত। এই হত্যালীলাকে কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না, বারবার জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। এই আবহের মধ্যেই প্রথম বড় সিদ্ধান্ত নিল ভারত। পাকিস্তানের সঙ্গে ‘সিন্ধু জল বন্টন’ চুক্তি বাতিল করল ভারত।
পাকিস্তানকে ‘ভাতে মারতে’ আর কী কী পদক্ষেপ করল ভারত?
শুধু তাই নয়, নয়া দিল্লিতে বন্ধ পাকিস্তান দূতাবাস। পাক নাগরিকদের সব রকম ভিসা বন্ধ করল এদেশ। ‘SAARC visa exemption’-এর অন্তর্গত পাক নগরিকদের আর ভিসা দেওয়া হবে না। যাঁদের দেওয়া হয়েছিল তাও বাতিল করা হয়েছে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানিদের ভারত ছাড়ার নির্দেশ। ভারত ও ইসলামাবাদ হাই কমিশন থেকে নিজেদের প্রতিনিধিদের ফিরিয়ে নিচ্ছে। এছাড়াও বন্ধ করা হয়েছে আটারি-ওয়াঘা চেকপোস্ট।
বুধবার, সন্ধে ছ’টায় নয়া দিল্লিতে বৈঠকে বসেন তিন সেনাপ্রধান। সঙ্গে ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল,প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী,প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। আর ভিডিয়ো কনফারেন্সে কাশ্মীর থেকে বৈঠকে যোগ দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সন্ধেয় ছ’টার সেই বৈঠকেই কূটনৈতিক স্তরে পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দেওয়া হয় ভারতের তরফে। একই সঙ্গে বৃহস্পতিবার সর্বদলীয় বৈঠক ডাকল কেন্দ্রীয় সরকার।
এ দিনের বৈঠক থেকে তিন সেনাকে অর্থাৎ (জল,স্থল, নৌ) তৈরি থাকার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় সরকার পাকিস্তানকে পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছে, এই নিকৃষ্ট ঘটনার পর ভারত তা কোনওভাবেই বরদাস্ত করবে না। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,
ভারত এর আগে একাধিকবার পাকিস্তানকে বার্তা দিয়েছিল, সন্ত্রাস যদি বন্ধ না হয় তাহলে সিন্ধু নদীর জল নিয়ে কড়া অবস্থান নেওয়া হবে। এই নিয়ে ইসলামাবাদকেও চিঠি পাঠানো হয়েছিল।
কবে এই চুক্তি হয়েছে?
১৯৬০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিন্ধু জল-বণ্টন চুক্তি হয় ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ও তৎকালীন পাক প্রেসিডেন্ট জেনারেল আয়ুব খানের মধ্যে সিন্ধু নদীর জল বণ্টন নিয়ে এই চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল। পাকিস্তানের করাচিতে গিয়ে এই চুক্তিপত্রে সই করেছিলেন পণ্ডিত নেহরু। সিন্ধু নদী এবং এর উপনদীগুলির জল ব্যবহারের জন্য বিশ্বব্যাংক (World Bank) মধ্যস্থতা করা হয়েছিল।ভারত যদি এই চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে আসে তাহলে পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের সেচ মারাত্মকভাবে ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। প্রভাব পড়বে কৃষিতে। একপ্রকার ভাতে মারা পড়বে পাকিস্তান।