নয়া দিল্লি : ‘বিচারকরা নিজেরাই বিচারক নিয়োগ করেন’ এই ধারণাটি অতিরঞ্জিত। কারণ, এ ক্ষেত্রে একজন বিচারক বা বিচার বিভাগীয় আধিকারিককে বেছে নেওয়ার প্রক্রিয়ায় অনেকে জড়িত থাকেন। তার মধ্যে বিচার বিভাগ অন্যতম একটি। রবিবার এমনটাই জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামন (Chief Justice of India NV Ramana)।
বিজয়ওয়াড়ার সিদ্ধার্থ ল’ কলেজের এক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। সেখানে “ভারতীয় বিচার বিভাগ – ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ” বিষয়ক এক আলোচনা সভায় বক্তৃতা দিচ্ছিলেন তিনি। সেই সময়েই এন ভি রামন বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে, বিচার বিভাগের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের উপর শারীরিকভাবে আক্রমণ বাড়ছে। মাঝে মাঝে, খবরের কাগজ এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় বিচারকদের বিরুদ্ধে প্রচারও করতে দেখা যায়, যদি বিচারকের নির্দেশ সংশ্লিষ্ট পক্ষের অনুকূল না হয়। তবে এই আক্রমণগুলি অনেক ক্ষেত্রেই ইন্ধন থাকে এবং ঠিক সময় বুঝে করা হয়।
পাবলিক প্রসিকিউটর বা সরকার পক্ষের আইনজীবীদের প্রাতিষ্ঠানিক প্রভাব থেকে মুক্ত করা দরকার বলেও মনে করেন তিনি। এন ভি রামনের মতে, সরকার পক্ষের আইনজীবীদের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে এবং তাঁরা যাতে শুধুমাত্র আদালতের কাছেই জবাবদিহি করেন, তাও নিশ্চিত করতে হবে।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেন, “আজকাল ‘বিচারকরা নিজেরাই বিচারক নিয়োগ করেন’-এর মতো বেশ কিছু কথা ভীষণ শোনা যায়। আমি এটিকে বহুল প্রচারিত একটি অতিরঞ্জিত কথা বলে মনে করি। প্রকৃতপক্ষে বিচার বিভাগ এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত অনেকগুলি পক্ষের মধ্যে একটি মাত্র।”
সম্প্রতি, কেরলের সাংসদ জন ব্রিটাস হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের (বেতন এবং পরিষেবার শর্তাবলী) সংশোধনী বিল, ২০২১ সংক্রান্ত বিষয়ে সংসদে বিতর্কের সময় বলেছিলেন, বিচারকদের নিয়োগ করা কোথাও শোনা যায় না।
বিচারপতি এন ভি রামন বলেন, “কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রক, রাজ্য সরকার, রাজ্যপাল, হাইকোর্ট কলেজিয়া, ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো সহ অনেক কর্তৃপক্ষ জড়িত থাকে এবং এ ছাড়াও থাকে শীর্ষ নির্বাহী যারা সকলেই একজন প্রার্থীর উপযুক্ততা পরীক্ষা করার জন্য মনোনীত। আমি এটা ভেবে খুব খারাপ লাগে যে আমার সুপরিচিতরাও এই ধারণা মেনে নিয়েছেন।”
এর পাশাপাশি বিচারক নিয়োগের জন্য কেন্দ্রের যে পদক্ষেপ তার প্রশংসা করে তিনি বলেন, “হাইকোর্টের করা কিছু সুপারিশ এখনও কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রকের দ্বারা সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো হয়নি।”