নয়া দিল্লি: মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধি দলে নাম থাকা সত্ত্বেও বাদ গেলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার (২০ ডিসেম্বর) বাংলার বকেয়া বরাদ্দ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে যোগ দেন তৃণমূল সাংসদদের এক প্রতিনিধি দল। এই দলে ছিলেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সাজদা আহমেদ, প্রতিমা মণ্ডল, প্রকাশ চিক বরাইক, সৌগত রায়, কাকলী ঘোষ দস্তিদার, ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং নাদিমুল হক। এই তালিকায় প্রথমে নাম ছিল কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত বৈঠকে দেখা যায়নি তাঁকে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়কে ভেঙানোর অভিযোগে এখন তুমুল বিতর্কের মুখে পড়েছেন শ্রীরামপুরের সাংসদ। সম্ভবত সেই কারণেই বিতর্ক এড়াতে, তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
তবে, প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে বৈঠকের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বিষয়টিকে ‘ক্যাজুয়ালি’ নিতে বলেছেন। সাংবাদিকরা তাঁকে এই নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “আপনারা কেন বলছেন অশ্রদ্ধার কথা। আমরা তো সকলকে শ্রদ্ধা করি। এখানে অশ্রদ্ধার কোনও বিষয়ই নেই। এটাকে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখা উচিত। সহজভাবে দেখা উচিত।” তবে, তিনি এই ঘটনাকে সমর্থন করছেন কিনা, তা স্পষ্ট করেননি।
কল্যাণ নিজেও দাবি করেছেন, উপরাষ্ট্রপতিকে আঘাত করার কোনও উদ্দেশ্য তাঁর ছিল না। তিনি মিমিক্রি (ভেঙানো) করেছেন ঠিকই, তবে এটা একটা শিল্প। প্রধানমন্ত্রীও করেন, সংসদের মধ্যেই। কল্যাণ বলেন, “কাউকে আঘাত করার উদ্দেশ্য আমার ছিল না। মিমিক্রি একটা শিল্প। ২০১৪ থেকে ২০১৯-এর মধ্যে লোকসভার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীই অনেকবার এটা করেছন। তবে আমার প্রশ্ন হল, উনি (জগদীপ ধনখড়) কি সত্যিই রাজ্যসভার অন্দরে এমনই আচরণ করেন? না-হলে আমার মিমিক্রি করা নিয়ে এত বিতর্ক হচ্ছে কেন?” মোদী-মমতা বৈঠক থেকে বাদ পড়া প্রসঙ্গে কল্যাণ বলেছেন, “কাকলীদিও ছিলেন দলে। উনিও যাননি। আজ সকালে দিদি ফোন করেছিলেন। বললেন, অনেকে হয়ে গিয়েছে, তাই না যেতে।”
এদিকে, উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় এদিন দাবি করেছেন, প্রধানমন্ত্রী মোদীও তাঁকে ফোন করে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। ধনখড়ের দাবি, প্রদানমন্ত্রী তাঁকে বলেন, গত কুড়ি বছর ধরে তিনি এই ধরনের বহু অপমান সহ্য করে চলেছেন। কিন্তু সংসদে উপরাষ্ট্রপতির এই ধরনের অপমান অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।