কানপুর: স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল। রাগ করে বাপের বাড়ি চলে গিয়েছিলেন স্ত্রী। তারপর প্রায় একমাস দুজনের মধ্যে কোনও কথা ছিল না। একমাস পর বাড়ি ফিরে এসে স্ত্রী দেখলেন ঘরের সিলিং ফ্যান থেকে একটি ফাঁসের সঙ্গে ঝুলছে স্বামীর দেহ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ওই অবস্থায় থাকতে থাকতে মৃতদেহটি সম্পূর্ণ কঙ্কাল হয়ে গিয়েছিল! এই দৃশ্য দেখেই জ্ঞান হারান স্ত্রী। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের কানপুরের বিলহাউর এলাকায়। অন্ততপক্ষে ২৯ দিন ধরে দেহটি ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল বলে অনুমান করা হচ্ছে। তাদের বাড়ি গ্রামের বাইরে এক নির্জন এলাকায় হওয়ায়, মৃতদেহটির উপস্থিতি কেউ টের পায়নি। কেউ জানতেই পারেনি তার মৃত্যুর কথা।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সুদামা শর্মা। বিলহাউর এলাকার আরাউল থানার অন্তর্গত গিলওয়াট আমিনাবাদের বাসিন্দা ছিলেন তিনি। সম্পত্তির ভাগ নিয়ে দুই ভাইয়ের সঙ্গে সুদামার বিরোধ চলছিল। বিরোধের জেরে গ্রাম থেকে দূরে একটি বাড়ি তৈরি করেছিলেন সুদামা। স্ত্রী কীর্তি শর্মা এবং দুই সন্তানকে নিয়ে সেখানেই থাকতেন তিনি। গ্রামের বাইরে বাড়ি হওয়ায় তাঁর বাড়ির আশপাশে আর কারোর বাড়ি ছিল না। এদিকে, গত ১৮ ডিসেম্বর স্ত্রী কীর্তির সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছিলেন তিনি। স্বামীর সঙ্গে ঝগড়ার পর দুই সন্তানকে নিয়ে কীর্তি বাপের বাড়ি চলে গিয়েছিলেন।
কীর্তির দাবি, ১৮ ডিসেম্বরের ঝগড়ার পর থেকে সুদামার সঙ্গে তিনি আর কথা বলেননি। বুধবার, একমাস পর তিনি সন্তানদের নিয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন। বাড়ির দরজা তালা বন্ধ ছিল। তালা খুলে ঘরে ঢুকে স্বামীর কঙ্কাল হয়ে যাওয়া ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান তিনি। তিনিই পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে, স্ত্রী বাপের বাড়ি চলে যাওয়ার পরই আত্মঘাতী হয়েছেন সুদামা। তবে, বাড়ির দরজা তালা বন্ধ ছিল বলে এর পিছনে অন্য কোনও ঘটনা থাকতে পারে বলেও মনে করছে পুলিশ।
আরাউল থানার ইনচার্জ অরুণ কুমার বলেছেন, “মৃতদেহটি আনুমানিক ২৫ থেকে ৩০ দিনের পুরোনো। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, স্ত্রী চলে যাওয়ার পর সুদামা বাড়ির দরজায় তালা লাগিয়ে, ফের কোনওভাবে ঘরে ঢুকে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বাড়ির আশেপাশে অন্য কোনও বাড়ি না থাকায়, কেউ তার মৃত্যুর কথা জানতে পারেনি। তবে, সুদামার বাবা ও দুই ভাইয়ের মধ্যে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ চলছিল। এই ঘটনার পিছনে তাদের কোনও ভুমিকা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তার শরীরে মদ বা বিষ ছিল কি না, তাও পরীক্ষা করা হচ্ছে।”