AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Karnataka: দেড়শো ফোনেও নেই বউয়ের সাড়া, রাতেই ২৩০ কিমি দূরের শ্বশুরবাড়ি গিয়ে…

Karnataka: কিশোরের ফোন আর না ধরার পরামর্শ দিয়েছিলেন মেয়েকে। ভেঙ্কটলক্ষ্মাম্মার পরামর্শ মেনে, রাতে আর ফোন ধরেননি প্রতিভা। সকালে উঠে দেখেছিলেন, কিশোরের ফোন থেকে ১৫০টি মিসড কল রয়েছে।

Karnataka: দেড়শো ফোনেও নেই বউয়ের সাড়া, রাতেই ২৩০ কিমি দূরের শ্বশুরবাড়ি গিয়ে...
বিয়ের পর থেকেই কিশোরের সন্দেহবাতিকের পরিচয় পেয়েছিলেন প্রতিভাImage Credit: Twitter
| Edited By: | Updated on: Nov 09, 2023 | 8:19 AM
Share

বেঙ্গালুরু: স্ত্রীর চরিত্র নিয়ে সন্দেহ ছিল স্বামীর মনে। সম্প্রতি, তাদের এক পুত্র সন্তান হয়েছিল। সন্তান জন্মের আগে বেশ কয়েকদিন তিনি বাপের বাড়িতে ছিলেন। তাতে স্বামীর সন্দেহের মাত্রা আরও বেড়েছিল। ফোনে কথা বলতে বলতে দুজনের মধ্যে এই বিষয় নিয়ে বাদানুবাদ চরম পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। তারপর থেকে স্বামীর ১৫০টি ফোনের জবাব দেননি স্ত্রী। তাতেই স্বামীর প্রচণ্ড রাগে, ২৩০ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিয়ে স্ত্রীকে হত্যা করল সে। শুধু তাই নয়, নিজেও কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন স্বামী। আপাতত, হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তার। অবস্থা আশঙ্কাজনক। তবে, তার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই একটি মামলা দায়ের করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে কর্নাটকে।

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম কিশোর ডি, বয়স ৩২। কর্নাটক পুলিশের এক কনস্টেবল হিসেবে কাজ করে সে। চামারাজনগর পূর্ব থানায় নিযুক্ত সে। আদতে সে কোলার দেলার বীরপুরার বাসিন্দা হলেও, কাজে সূত্রে এখন থাকে চামারাজনগরের রামসমুদ্র এলাকায়। ২০২২-এর ১৩ নভেম্বর, বেঙ্গালুরু গ্রামীণ জেলার হোককোটের বাসিন্দা, প্রতিভার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তাঁর। প্রতিভা, বেট্টাহালাসুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সচিব সুব্রমণির মেয়ে। পড়াশোনাতেও অত্যন্ত ভাল ছিল। কম্পিউটার সায়েন্সে ডিগ্রি রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, বিয়ের পর থেকেই কিশোরের সন্দেহবাতিকের পরিচয় পেয়েছিল প্রতিভা।

প্রতিদিন প্রতিভার ফোন খুলে তার কল লিস্ট এবং মেসেজ পরীক্ষা করত কিশোর। প্রতিভা কার সঙ্গে কথা বলছে, কতক্ষণ কথা বলছে – সব খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখত সে। কারা কারা প্রতিভাকে ফোন করছে, তাদের সকলের নাম-পরিচয় খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জানকে চাইত। কিশোরের অভিযোগ ছিল, কলেজের দুই পুরুষ বন্ধুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রয়েছে প্রতিভার। সে বারবার অস্বীকার করলেও, তার কথা মানেনি কিশোর। দিন দশেক আগে, প্রতিভার এক পুত্র সন্তান হয়। তিনি ভেবেছিলেন, সন্তানের জন্মের পর অন্তত কিশোরের সন্দেহ বাতিক দূর হবে।

কিন্তু, কার্যক্ষেত্রে তা হয়নি। রবিবার (৫ নভেম্বর) রাতে, প্রতিভাকে ফোন করেছিলেন কিশোর। কোনও একটি বিষয় নিয়ে প্রতিভাকে ফোনে ধমকাতে শুরু করেছিল কিশোর। ফোনের এই পাড়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন প্রতিভা। প্রতিভার কান্না চোখ এড়ায়নি তাঁর মা ভেঙ্কটলক্ষ্মাম্মার। মেয়ের হাত থেকে ফোনটি ছিনিয়ে নিয়ে, তিনি ফোনকলটি কেটে দিয়েছিলেন। মেয়েকে তিনি বলেছিলেন, প্রতিভা যদি এই ভাবে কেঁদে যায়, তাহলে তার সন্তানের ক্ষতি হবে। কিশোরের ফোন আর না ধরার পরামর্শ দিয়েছিলেন মেয়েকে। ভেঙ্কটলক্ষ্মাম্মার পরামর্শ মেনে, রাতে আর ফোন ধরেননি প্রতিভা। সকালে উঠে দেখেছিলেন, কিশোরের ফোন থেকে ১৫০টি মিসড কল রয়েছে।

এদিকে, বারবার ফোন করে প্রতিভাকে না পেয়ে প্রচণ্ড খেপে গিয়েছিলেন কিশোর। রাতেই তিনি চামারাজনগর থেকে ২৩০ কিলোমিটার দূরে শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। সোমবার সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ শ্বশুরবাড়ি পৌঁছয় সে। প্রতিভা এবং তাঁর দিন দশেকের সন্তান ছিল প্রথম তলাতেই। শ্বশুরবাড়ি পৌঁছে, শুরতেই প্রতিভার ঘরে হানা দিয়েছিল সে। প্রথমে কীটনাশক খায়, তারপর ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে দিয়েছিল। এরপরই বন্ধ ঘরে প্রতিভার গলায় একটি দোপাট্টা জড়িয়ে শ্বাসরোধ করে তাঁকে হত্যা করে সে। এর মধ্যে নীচে নেমে এসেছিলেন ভেঙ্কটলক্ষ্মাম্মা। বেশ কয়েকবার দরজা ধাক্কিয়েও সড়া না পেয়ে, বিপদের আশঙ্কা করেছিলেন তিনি। বারবার দরজা ধাক্কা দিতে দিতে কিশোরকে দরজা খোলার জন্য বলেছিলেন তিনি। মিনিট ১৫ পর, দরজা খুলেছিল কিশোর। ‘আমি প্রতিভাকে মেরে ফেলেছি’, বলেই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়েছিল সে।

পুলিশ জানিয়েছে, সেখান থেকে পালিয়ে কোলার জেলার আরএল জলাপ্পা হসপিটালে গিয়ে নিজেই ভর্তি হয়েছিল কিশোর। পরে, হোসকোটে পুলিশ তাকে অন্য এক হাস,পাতালে নিয়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, তার অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেই তাকে হেফাজতে নেওয়া হবে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে, কিশোরের বিরুদ্ধে হত্যার মামলা দায়ের করেছেন প্রতিভার ববা সুব্রমণি। তিনি কিশোরের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড চেয়েছেন। তাঁর আরও অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে কিশোরের মা পণের দাবিতে তাঁর মেয়ের উপর নিয়মিত অত্যাচার করত।