তিরুবনন্তপুরম: করোনা (COVID-19) নিয়ে ক্রমশ উদ্বেগ বাড়ছে কেরলে(Kerala)। একদিকে যেখানে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্য়া ৫০ হাজারের গণ্ডি পার করেছে, সেখানেই রাজ্য় স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হল, আক্রান্তদের মধ্য়ে ৯৪ শতাংশই ওমিক্রনে (Omicron) আক্রান্ত। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ বলেন, ওমিক্রনের নতুন ভ্যারিয়েন্টেই আক্রান্ত হচ্ছেন অধিকাংশ মানুষ আগামী তিন সপ্তাহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এরপরই সংক্রমণ কমতে থাকবে।
বৃহস্পতিবারই কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫১ হাজার ৭৩৯ জন এবং সংক্রমণের জেরে মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। এছাড়াও আগে ৫৭জনের মৃত্যুকেও করোনা সংক্রমণে মৃত্যু বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এই নিয়ে রাজ্যে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২ হাজার ৪৩৪-এ। বর্তমানে রাজ্যে সংক্রমণের হার ৪৪.৬ শতাংশ, যা বাকি রাজ্যগুলির তুলনায় অনেকটাই বেশি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ বলেন, “আক্রান্ত রোগীদের জিনোম সিকোয়েন্স করে জানা গিয়েছে যে তাদের মধ্যে ৯৪ শতাংশই ওমিক্রনে আক্রান্ত। বাকি ৬ শতাংশ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত। নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে ৩.৬ শতাংশের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন পড়েছে। অন্যদিকে, আইসিইউ-র প্রয়োজনীয়তা তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কমেছে।”
তিনি আরও বলেন, “সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মতো এবারে হাসপাতাল পরিকাঠামোর উপর তেমন চাপ সৃষ্টি হয়নি। আক্রান্তদের মধ্যে ৯০ শতাংশই বাড়িতেই একান্তবাসে রয়েছেন। যাদের গুরুতর কো-মর্ডিবিটি রয়েছে, কেবল তারাই হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।”
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ জানান, রাজ্যের সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলিকেই করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক শয্যা সংরক্ষিত রাখতে বলা হয়েছে। যদি কোনও বেসরকারি হাসপাতাল করোনা রোগী ভর্তি নিতে বা চিকিৎসা দিতে অস্বীকার করে, তবে তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দ্বিতীয় ঢেউয়ের সঙ্গে বর্তমান সংক্রমণে হাসপাতালে রোগী ভর্তির হারের তুলনামূলক বিচার করে দেখা গিয়েছে, দ্বিতীয় ঢেউ যখন শীর্ষে পৌঁছেছিল, অর্থাৎ ২০২১ সালের মে মাসে, সেই সময় হাসপাতালের ৮০ শতাংশ বেডই পরিপূর্ণ ছিল। এবার সেই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩০ শতাংশে। একইভাবে, দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় অক্সিজেনযুক্ত বেডের ৬০ শতাংশই ভর্তি ছিল, এ বার তা ২০ শতাংশের নীচে রয়েছে।
এই বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “ওমিক্রন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় অধিক সংক্রামক হলেও, এই ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিত হয়ে মানুষ কম অসুস্থ হচ্ছেন। শুধু জ্বরের উপসর্গ যুক্ত করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিরা বাড়িতেই থাকতে পারেন। সাধারণ মানুষের সহায়তার জন্য রাজ্য সরকারের তরফে কমিউনিটি কিচেন চালু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্য দফতর প্রতিটি জেলায় কোভিড ওয়ার রুম তৈরি করেছে। দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য একজন করে মন্ত্রীকেও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ”