তিরুবনন্তপুরম: করোনার (COVID-19) দাপাদাপি তো রয়েছেই, তার উপরে মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে ওমিক্রন (Omicron)। জোড়া সংক্রমণের ঠেলা সামলাতে কার্যত হিমশিম খাচ্ছে কেরল (Kerala) সরকার। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের (State Health Department) তথ্য অনুযায়ী, রবিবার কেরলে নতুন করে ৪৫ জন ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। এই প্রথম রাজ্যে একদিনে এত সংখ্যক ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ মিলল।
গত ৭ ডিসেম্বর কেরলে প্রথম ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ মেলে। এক মাসের মধ্যেই সেই আক্রান্তের সংখ্যা ১৫০ পার করল। গতকাল রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ জানান, একদিনে নতুন করে ৪৫ জন ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে, যা সর্বোচ্চ দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা। বর্তমানে রাজ্যে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৫২-এ।
কেরলে ওমিক্রন আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশই বিদেশ ফেরত যাত্রী বলে জানা গিয়েছে। গতকালের আক্রান্তদের মধ্যে ৯ জন বিদেশ থেকে এসেছেন এবং ৩২ জন দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে এসেছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। একইসঙ্গে কনট্যাক্ট ট্রেসিং(Contact Tracing)-র মাধ্যমে ৪ জন ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে এসে সংক্রমিত হওয়ার সংখ্যা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাওয়ায় গোষ্ঠী সংক্রমণের (Community Transmission) সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। সর্বাধিক আক্রান্তের খোঁজ মিলছে তিরুবনন্তপুরম থেকেই।
সংক্রমণের গ্রাফ উর্ধ্বমুখী হতেই রাজ্যে কড়া নজরদারি শুরু করা হয়েছে বলে জানান কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ(Veena George)। তিনি বলেন, “আগামিদিনে আমাদের অত্য়ন্ত সতর্ক থাকতে হবে। করোনাবিধি যাতে কঠোরভাবে পালন করা হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। আমরা দেখেছি যে কথা বলার সময় অনেকেই মাস্ক নামিয়ে ফেলছেন, এমন ভুল করবেন না।”
ওমিক্রনের পাশাপাশি রাজ্যে করোনা সংক্রমণও বাড়ছে। গত ১ জানুয়ারিই দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজারের গণ্ডি পার করেছে। করোনা মোকাবিলায় রাজ্যের প্রস্তুতি সম্পর্কে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “রাজ্যে পর্যাপ্ত সংখ্যক বেডের ব্যবস্থা ও অক্সিজেন মজুত করে রাখা হয়েছে। তবে এখনই উদ্বেগের কোনও কারণ নেই। আক্রান্তের সংখ্য়া বাড়লেও, হাসপাতালে রোগী ভর্তি হওয়ার সংখ্য়া তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কম।”
কেরলে টিকাকরণের হার বাকি রাজ্যের তুলনায় অনেকটাই ভাল বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ। তিনি জানান, রাজ্যের ৯৮ শতাংশ জনগণই ইতিমধ্যে করোনা টিকার প্রথম ডোজ় পেয়ে গিয়েছেন এবং ৭৭ শতাংশ দুটি ডোজ়ই পেয়েছেন। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ১০০ শতাংশ টিকাকরণের লক্ষ্য পূরণ হয়ে যাবে বলে আশাবাদী স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এরই মধ্যে আজ থেকে শুরু হচ্ছে ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের টিকাকরণও। ছোটদের টিকাকরণের জন্য আলাদা টিকাকেন্দ্রের পাশাপাশি স্কুলগুলিতেও টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।