তিরুবনন্তপুরম: দু-চোখে একরাশ স্বপ্ন ছিল। মাধ্যমিক সমতুল্য SSLC পরীক্ষায় সব বিষয়ে A+ পেয়েছিল কেরলের (Kerala) তিরুবনন্তপুরমের সারাং। পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলোতেও তুখোড় ছিল ১৬ বছরের কিশোরটি। ফুটবল ছিল প্রিয় খেলা। কেরালা ব্ল্যাস্টার্স (Kerala Blasters) টিমের অন্যতম সমর্থক ছিল। কিন্তু, এক নিমেষে সমস্ত স্বপ্ন ছাই হয়ে গেল। SSLC পরীক্ষার ফল প্রকাশের দু-দিন আগেই পথ দুর্ঘটনায় ব্রেন ডেথ (Brain Death) হল সারাংয়ের। মাধ্যমিকে অসাধারণ ফল করার কথা জানতে পারল না সে। তবে নিজের স্বপ্ন পূরণ না হলেও অন্যের স্বপ্ন পূরণ করে গেল তিরুবনন্তপুরমের এই কিশোর। সারাংয়ের ব্রেন ডেথ হলেও অন্তত ৬ জনকে নতুন জীবন দিয়ে গেল সে। মেধাবী কিশোরের মর্মান্তিক পরিণতিতে শোকাহত রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ভি.শিবানকুট্টিও। SSLC রেজাল্ট ঘোষণার সময় সারাংয়ের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন তিনি।
SSLC রেজাল্ট ঘোষণার সময় আবেগাপ্লুত শিক্ষামন্ত্রী ভি.শিবানকুট্টি বলেন, সারাং এ প্লাস মার্কস পেয়েছে। ফুটবল খেলোয়াড় হিসাবে সারাং সকলের মনে থাকবে। কেরল ব্লাস্টার্স দলেরও সমর্থক ছিল সে। সারাংয়ের বিভিন্ন অঙ্গদান করার সিদ্ধান্তে তার পরিবারের প্রশংসা জানিয়েছেন মন্ত্রী। কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ভিনা জর্জও সারাংয়ের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন এবং তিনি জানিয়েছেন, সারাংয়ের দুটি কিডনি, যকৃৎ, হার্ট ভালভ এবং দুটি কর্নিয়া দান করা হয়েছে।
ঠিক কী হয়েছিল সারাংয়ের?
তিরুবনন্তপুরমের বাসিন্দা সারাং আত্তিঙ্গলের গভর্নমেন্ট বয়েজ এইচএসএস স্কুলের ছাত্র ছিল। গত ১৩ মে, শনিবার দুপুর সাড়ে ৩টে নাগাদ কাল্লামবালাম-নাগারুর রোডে এক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে সারাং। সে একটি অটোরিক্সায় করে যাচ্ছিল। ওই অটোরিক্সাটি একটি গাড়িকে পাশ দিতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেল এক ইলেকট্রিক পোলে ধাক্কা মারে এবং রাস্তার উপর উল্টে পড়ে যায়। সেই দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয় সারাং। সঙ্গে সঙ্গে তাকে তিরুবনন্তপুরমে এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, চিকিৎসকরা শত চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হন। সারাংয়ের ব্রেন ডেথ হয়েছে বলে বুধবার ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
সারাংয়ের ব্রেন ডেথ হলেও অন্যের মধ্যে সে বেঁচে থাকতে পারে। তাই তার বিভিন্ন অঙ্গ দান করার সিদ্ধান্ত নেয় সারাংয়ের পরিবার। সারাংয়ের দান করা অঙ্গে ইতিমধ্যে নতুন জীবন ফিরে পেয়েছেন ৬ জন।