
সাক্ষাৎ যমের দুয়ার থেকে ফিরে আসা বলতে যা বোঝায় এও যেন ঠিক তাই। ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওতে জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন। সেই হামলার মধ্যেও পড়েও প্রাণ হাতে নিয়ে ফিরে আসার গল্প শুনিয়েছেন অনেকেই। কেউ হয়তো বেঁচে গিয়েছেন ভগ্য জোরেই। সামনে তেমনই এক ঘটনা। যা হার মানাবে যে কোনও সিনেমার প্লটকেও।
সেদিন জঙ্গি হামলার মধ্যে পড়েছিলেন কর্ণাটকের হেগড়ে পরিবারও। স্ত্রী শুভা এবং ১২ বছরের ছেলে সিধান্তকে নিয়ে মঙ্গলবার বৈসরন গিয়েছিলেন প্রদীপ হেগড়ে। সেই সময় ওখানে হয় জঙ্গি হামলার। কপাল জোরে জঙ্গিদের চালানো গুলি চুল ছুঁয়ে বেরিয়ে যায়। তাই প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন তিনি।
এক ঘন্টার দীর্ঘ যাত্রাপথ অতিক্রম করে বৈসরন উপত্যকায় পৌঁছায় তিন জন। একটু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করে অ্যাডভেঞ্চার অ্যাক্টিভিটির আনন্দ উপভোগ করতে চেয়েছিলেন শোভা এবং প্রদীপ। কিন্তু দীর্ঘ যাত্রার কারণে খিদে পেয়ে যায় ছেলে সিদ্ধান্তের। তাই প্রথমে পেটপুজো তারপরে অ্যাডভেঞ্চার অ্যাক্টিভিটি করার কথা বলে সে। আর তাতেই প্রাণ রক্ষা।
প্রদীপ হেগড়ে বলেন, “১:৪৫ নাগাদ আমরা ওখানে যাওয়ার কথা ভাবছিলাম। আমার ছেলে বলল ওর খিদে পেয়েছে। আমরা ওকে বোঝানোর চেষ্টাও করি যে আমরা যাওয়ার আগে কিছু খেতে পারি কিন্তু ও রাজি হয়নি। তাই আগে একটা খাবারের দোকানের দিকে চলে যাই। ম্যাগি অর্ডার করি। আমার স্ত্রী তখন প্রায় ৫০০ মিটার দূরে বাথরুমে যায়।পে-এন্ড-ইউজ টয়লেট। ফিরে এসে টাকা নিয়ে আবার যায়। ততক্ষণে, আমাদের খাবার শেষ। স্ত্রীও দ্রুত নিজের খাবার খেতে থাকে।”
তিনি বলেন, “এর প্রায় ১৫-২০ সেকেন্ড পর, আমরা বড় বন্দুক হাতে দুজন লোককে দেখতে পাই। ওরা একটানা গুলি চালাচ্ছিল।”
প্রদীপ বাবু জানান, একজন সন্ত্রাসী উপত্যকার নিম্নাঞ্চলে ছিল এবং অন্যজন তাদের দিকে এগিয়ে আসছিল। প্রদীপ বলেন, “প্রথমে আমরা বুঝতে পারিনি কী হচ্ছে! তারপরেই মাটিতে পড়ে যাই। ওই সময় আমার স্ত্রী টেবিলে রাখা আমার ব্যাগটা তুলে নেওয়ার কথা ভাবেন। ওই ব্যাগে আমাদের পরিচয়পত্র এবং ফোন ছিল। ব্যাগটি তুলতে উঠলে ডান কানের কাছ দিয়ে চুল ঘেষে কিছু একটা বেরিয়ে যায়। প্রথমে বুঝতে না পারলেও পিছনে ফিরে দেখেন ওটা আসলে একটা একটি গুলি ছিল।”
শুভা বলেন, “কিছু একটা আমার চুলে লেগেছিল। প্রথমে আমি বুঝতে পারিনি যে এটি একটা গুলি, কিন্তু যখন আমি পিছনে ফিরে তাকালাম, তখন বুঝতে পারলাম ওটা গুলি। ঈশ্বর আমাদের রক্ষা করলেন।”