নয়া দিল্লি: লখিমপুর কাণ্ডে (Lakhimpur Violence) এবার কম সংখ্যক সাক্ষী নিয়ে প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। লখিমপুর কাণ্ড নিয়ে মামলা শুরুর পর থেকেই শীর্ষ আদালতের ভৎসর্নার মুখে পড়ছে উত্তর প্রদেশ পুলিশ (uttar pradesh Police) ও প্রশাসন। এ দিনও মামলার শুনানিতে মাত্র ২৩ জনকে প্রত্যক্ষদর্শী হিসাবে পেশ করায় প্রশ্ন তোলে শীর্ষ আদালত।
এ দিন মামলার শুরুতেই প্রধান বিচারপতি এনভি রমণ(NV Ramana)-র বেঞ্চের তরফে জানতে চাওয়া হয়, এত কম সংখ্যক মানুষকে কেন সাক্ষী হিসাবে পেশ করা হয়েছে? জবাবে উত্তর প্রদেশ সরকার পক্ষের আইনজীবী হরিশ সালভে বলেন, “৬৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩০ জনের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে এবং ২৩ জন প্রত্যক্ষদর্শী হিসাবে দাবি করেছেন।” এরপরই শীর্ষ আদালতের তরফে জানতে চাওয়া হয়, কৃষক আন্দোলন চলাকালীন গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনাটি ঘটেছিল, সেই সময় কমপক্ষে শতাধিক কৃষক উপস্থিত ছিলেন ঘটনাস্থলে, তবে মাত্র ২৩ জন প্রত্যক্ষদর্শী কীভাবে হয়?
আইনজীবী সালভে জানান, ওই ২৩ জন গাড়িটি এবং তার ভিতরে কারা উপস্থিত ছিলেন, তা দেখেছেন। সেই কারণেই কেবল তাদের প্রত্যক্ষদর্শী হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে বলা হয়েছে, আরও সাক্ষীর বয়ান যেন রেকর্ড করা হয় এবং সাক্ষীদের নিরাপত্তার ব্যবস্থাও যেন করা হয়।
আদালতের তরফে বলা হয়, “যদি বয়ান রেকর্ড করতে কোনও সমস্যা হয় এবং বিচারবিভাগীয় আধিকারিকরা অনুপস্থিত থাকেন, তবে জেলা আদালতের বিচারপতি যেন বিকল্পের ব্যবস্থা করেন।” আদালতের তরফে উত্তর প্রদেশ সরকারকে এও বলা হয় যে, যদি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ব্যক্তির তুলনায় প্রত্যক্ষদর্শী বেশি বিশ্বাসযোগ্য হয়, তবে সরাসরি তথ্য সংগ্রহ করাই শ্রেয়।
লখিমপুর খেরিতে হিংসার ঘটনায় যারা সাক্ষ্য দিচ্ছেন, তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করারও নির্দেশ দেওয়া হয় শীর্ষ আদালতের তরফে। একইসঙ্গে উত্তর প্রদেশ পুলিশকে দ্রুত ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান রেকর্ড করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
আগামী ৮ নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। সেই দিন শীর্ষ আদালতে কৃষক বাদে সাংবাদিক সহ বাকি চার ব্য়ক্তির মৃত্যু নিয়ে আলাদাভাবে একটি স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। এর আগে গত ২০ অক্টোবরও মমালার শুনানিতে সরকার পক্ষকে তীব্র ভৎসর্না করেছিল শীর্ষ আদালত। রিপোর্ট দেরীতে জমা দেওয়ার জন্য চরম সমালোচনা করে প্রধান বিচারপতি এনভি রমণ বলেছিলেন, “আমরা গতকাল রাত ১টা অবধি অপেক্ষা করেছি রিপোর্টের জন্য, কিন্তু কেনও রিপোর্টই জমা পড়েনি। যদি শুনানি শুরু হওয়ার কয়েক মিনিট আগে আপনারা রিপোর্ট জমা দেন, তবে আমরা কীভাবে সেই রিপোর্ট পড়ব? শুনানির অন্তত একদিন আগে রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে, এটাই আশা করা হয়। আমরা সিল করা কভারে রিপোর্ট চাইনি।” সমস্ত সাক্ষীদের বয়ান রেকর্ড করার নির্দেশ দিয়ে শীর্ষ আদালতের তরফে বলা হয়, “এটা যেন অসমাপ্ত গল্পে পরিণত না হয়।”