লখনউ: রাজ্য়ে তথা গোটা দেশে ক্রমশ বাড়ছে করোনা সংক্রমণ (COVID-19)। এদিকে সংক্রমণের দুটি ঢেউ পার করেও হুঁশ ফিরছে না সাধারণ মানুষের। শুক্রবার মকর সংক্রান্তি (Makar Sankranti) উপলক্ষে উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন ঘাটে যে হারে পুণ্যার্থীদের ভিড় দেখা গেল, তাতে করোনাবিধির লেশমাত্রও দেখা গেল না। মকর সংক্রান্তি উপলক্ষ্যেই উত্তর প্রদেশের প্রয়াগরাজে (Prayagraj) শুরু হয়েছে মাঘ মেলা। শুক্রবার সকাল থেকেই উপচে পড়া ভিড় দেখা যায় সেখানে। গঙ্গার বিভিন্ন ঘাটেও পুণ্য অর্জনের আশায় বাচ্চা থেকে বুড়োদের ভিড় দেখা যায়। মাঘ মেলায় বিকেল ৬টা অবধিই প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষ পুণ্যস্নান সেরেছেন বলে জানা গিয়েছে।
শুক্রবার সকাল থেকেই প্রয়াগরাজের জেলা শাসক সঞ্জয় কুমার ক্ষত্রি, মেলা অধিকারিক শেষমণি পাণ্ডে ও পুলিশের সিনিয়র সুপারিন্টেন্ডেন্ট অজয় কুমার প্রয়াগরাজের ভিআইপি ঘাট, সঙ্গম, আরাইল ঘাট সহ একাধিক বড় ঘাটগুলি পরিদর্শন করে দেখেন। মেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, গতকালই আগত পুণ্যার্থীদের মধ্য়ে ৬৫ হাজার মাস্ক বিলি করা হয়েছে। এছাড়া মেলায় প্রবেশের জন্য যে ১৬টি প্রবেশ পথ তৈরি করা হয়েছে, প্রত্য়েকটিতে তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে। গাড়ির পার্কিং এলাকাতেও একইভাবে থার্মাল স্ক্রিনিং করা হচ্ছে।
ক্রমবর্ধমান করোনা সংক্রমণের মাঝে মেলার আয়োজন করা যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ ছিল বলে জানিয়েছে মেলা কর্তৃপক্ষ। তাদের তরফে জানানো হয়েছে, মেলা শুরুর আগেই কর্তব্য়রত বহু পুলিশকর্মী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। সেই কারণে এবার বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। যথাসম্ভব কম ভিড়, জমায়েত আটকানোর মতো চেষ্টা করা হয়েছে। এছাড়া ক্রমাগত মাইকিং করে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরার মতো নিয়মবিধি পালনের কথাও বলা হয়েছে।
রাজ্যে করোনা সংক্রমণ ফের একবার বৃদ্ধি পাওয়ায় উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন, “যাদের করোনার দুটি টিকাই নেওয়া হয়ে গিয়েছে এবং সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছেন, একমাত্র তারাই মাঘ মেলায় অংশ নিন এবং গঙ্গাস্নান করুন।”
মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াগরাজ জেলা প্রশাসনকেও সম্পূর্ণ করোনাবিধি যাতে অনুসরণ করা হয়, সেই নির্দেশও দিয়েছিলেন তিনি। জেলা প্রশাসনের তরফেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, মেলায় আসতে হলে সকল দর্শনার্থীদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করাতে হবে। এছাড়া ভ্যাকসিন সার্টিফিকেটও থাকতে হবে সকলের কাছে। করোনাবিধি না মানলে জরিমানার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
সাধারণ মানুষের সুবিধার জন্য মেলা প্রাঙ্গণেই গঙ্গা ও ত্রীবেণী নামে দুটি ৫০ শয্যার হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া ১২টি স্বাস্থ্য পরীক্ষা কেন্দ্র, ১০টি চিকিৎসা কেন্দ্রও তৈরি করা হয়েছে।