
নয়া দিল্লি: সর্বোচ্চ সাজা কি আর ফাঁসি থাকবে না? মৃত্যুদণ্ডের সাজাপ্রাপ্তদের ফাঁসির বদলে প্রাণঘাতী ইঞ্জেকশন দেওয়া হবে কি না, তা নিয়েই মামলা সুপ্রিম কোর্টে। কেন্দ্রীয় সরকার এর বিরোধিতা করেছে। আজ সুপ্রিম কোর্টে সেই মামলার শুনানিতেই বলা হয় যে সরকার এখনও পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত নয়।
ফাঁসির সাজার বদলে প্রাণঘাতী ইঞ্জেকশন দিয়ে মৃত্যুদণ্ডের সাজা চেয়ে কিংবা সাজাপ্রাপ্ত বন্দিকে এই দুই অপশনের মধ্যে বেছে নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল। পিটিশনারের পক্ষে হাজির আইনজীবী ঋষি মালহোত্রা বলেন, “অন্তত বন্দিদের বেছে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হোক…যে তারা ফাঁসি চান নাকি প্রাণঘাতী ইঞ্জেকশন…প্রাণঘাতী ইঞ্জেকশনে দ্রুত মৃত্য়ু হবে। এটা ফাঁসির তুলনায় অনেকটা মানবিকও। ফাঁসি অত্যন্ত নৃশংস, বর্বরোচিত ও দীর্ঘস্থায়ী হয়।”
তিনি আরও বলেন যে মিলিটারিতেও এই অপশন দেওয়া হয়। মামলাকারীদের যুক্তি, বর্তমানে মৃত্যুদণ্ডের যে সাজা রয়েছে, তাতে দীর্ঘ সময় ধরে কষ্ট-যন্ত্রণা দেওয়া হয়। এর বদলে প্রাণঘাতী ইঞ্জেকশন বা বিদ্যুতের শক দিয়ে কিংবা গ্যাস চেম্বারের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, যাতে কয়েক মিনিটের মধ্যেই মৃত্যু হয়। ফাঁসির সাজায় কমপক্ষে ৪০ মিনিট লাগে। মামলাকারীরা এও তুলে ধরেন যে আমেরিকায় ৫০টি রাজ্যের মধ্যে ৪৯টিতেই প্রাণঘাতী ইঞ্জেকশন দিয়ে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়।
যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে হলফনামা দিয়ে বলা হয়েছে যে এটা গ্রহণযোগ্য নয়। বিচারপতি বিক্রম নাথ ও বিচারপতি সন্দীপ মেহতার বেঞ্চে মৌখিক পর্যবেক্ষণে বলা হয় যে সরকার সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই পরিবর্তন গ্রহণ করতে প্রস্তুত নয়। শীর্ষ আদালতের তরফে বলা হয়, “সমস্যা হল সরকার বিবর্তনের জন্য প্রস্তুত নয়… এটা একটা অত্যন্ত পুরনো পদ্ধতি (ফাঁসি), সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবকিছু বদলেছে।”
সরকারের তরফে উপস্থিত আইনজীবী সনিয়া মাথুর পাল্টা হলফনামায় উল্লেখ করেন যে বন্দিদের এই বাছাই করার সুযোগ দেওয়ার সঙ্গে নীতিগত সিদ্ধান্ত জড়িত। আগামী ১১ নভেম্বর পর্যন্ত এই মামলার শুনানি স্থগিত রয়েছে।