নয়া দিল্লি: রবিবার (২৮ মে) নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। উদ্বোধন অনুষ্ঠানের পরই ‘মন কি বাত’ রেডিয়ো অনুষ্ঠানে দেশের জনগণের সামনে নিজের ভাবনচিন্তা প্রকাশ করলেন নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রীর এই রেডিয়ো অনুষ্ঠানের আগের পর্বটি ছিল ১০০তম। এই পর্বের শুরুতেই নরেন্দ্র মোদী বললেন এই পর্বটি নতুন সেঞ্চুরির শুরু। আর কী বললেন প্রধানমন্ত্রী? দেখে নিন এক নজরে –
অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব এনটি রামা রাওকে তাঁর জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানালেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
২৮ মে সাভারকরের জন্মদিবস। মন কি বাত-এর ১০১তম সংস্করণে তাঁকে স্মরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তিনি বলেছেন, “বীর সাভারকরের ব্যক্তিত্ব ছিল দৃঢ়তা এবং উদারতায় ভরা। নির্ভীক ও আত্মমর্যাদাপূর্ণ স্বভাবের জন্য তাঁর দাসত্বের মানসিকতা পছন্দ ছিল না। শুধু স্বাধীনতা আন্দোলন নয়, বীর সাভারকর সামাজিক সাম্য এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য যা করেছিলেন তা আজও স্মরণ করা হয়।”
১৯৬৫ সালের যুদ্ধের সময়, আমাদের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রী জয় জওয়ান, জয় কিষান স্লোগান দিয়েছিলেন। পরে অটলজি এতে জয় বিজ্ঞান যোগ করেন। কয়েক বছর আগে দেশের বিজ্ঞানীদের সঙ্গে কথা বলার সময় আমি জয় অনুসন্ধানের কথা বলেছিলাম। ‘মন কি বাত’-এ, আজকের আলোচনা এমন এক ব্যক্তিকে নিয়ে, এমন একটি সংস্থাকে নিয়ে, যা এই চারটিরই প্রতিফলন, জয় জওয়ান, জয় কিষাণ, জয় বিজ্ঞান এবং জয় অনুসন্ধান। তিনি হলেন মহারাষ্ট্রে শিবাজি শ্যামরাও ডোলে। তিনি নাসিকের ছোট এক গ্রামের মানুষ গরীব আদিবাসী পরিবারের সদস্য। এই প্রাক্তন সেনাকর্মী অবসরের পর কৃষিতে ডিপ্লোপা করেন। এরপর কয়েকজন প্রাক্তন সতীর্থকে নিয়ে তিনি ‘ভেঙ্কটেশ্বর কোয়াপারেটিভ পাওয়ার অ্যান্ড এগ্রো প্রসেসিং লিমিটেড’ নামে একটি সংস্থা তৈরি করেন। আজ এই সংস্থা মহারাষ্টে ও কর্নাটকের বহু জেলায় কাজ করছে। প্রায় ৮০০০ ব্যক্তি এই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত।
দেশের বহু যুবক যেমন উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তি ক্ষেত্রে কাজ করছে, তেমনই বহু যুবক রয়েছে সমাজকে সচেতন করার কাজে নিযুক্ত রয়েছে।
আমরা সবাই একটা কথা বহুবার শুনেছি, জল ছাড়া সব হারিয়ে যায়। জল না থাকলে জীবনে সবসময়ই সংকট দেখা দেয়। ব্যক্তি ও দেশের উন্নয়নও থমকে যায়। এই চ্যালেঞ্জের পরিপ্রেক্ষিতে, আজ দেশের প্রতিটি জেলায় ৭৫টি করে অমৃত সরোবর তৈরি করা হচ্ছে।
দেশের সমস্ত প্রধানমন্ত্রীদের উত্সর্গ করা পিএম মিউজিয়াম জাতীয় রাজধানীতে বাড়তি সৌন্দর্য যোগ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
গত কয়েক বছরেও, আমরা ভারতে নতুন ধরণের যাদুঘর এবং স্মৃতিসৌধ তৈরি হতে দেখেছি। স্বাধীনতা সংগ্রামে আদিবাসী ভাই-বোনদের অবদানের জন্য নিবেদিত দশটি নতুন যাদুঘর স্থাপন করা হচ্ছে।
“২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত ইন্ডিয়ান মেমোরি প্রজেক্ট হল এক ধরনের অনলাইন মিউজিয়াম। এটি সারা বিশ্ব থেকে পাঠানো ছবি এবং গল্পের মাধ্যমে ভারতের গৌরবময় ইতিহাসের লিঙ্কগুলিকে সংযুক্ত করে। দেশভাগের ভয়াবহতার সঙ্গে জড়িত স্মৃতিগুলিও সামনে আনার চেষ্টা করা হয়েছে।”
“গুরুগ্রামে একটি অনন্য যাদুঘর রয়েছে – মিউজও ক্যামেরা। ১৮৬০ সালের পর থেকে তৈরি ৮ হাজারেরও বেশি ক্যামেরার সংগ্রহ রয়েছে এখানে। তামিলনাড়ুর মিউজিয়াম অব পসিবিলিটিস আমাদের বিশএষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের কথা মাথায় রেখে নকশা করা হয়েছে। মুম্বইয়ের ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ বাস্তু সংগ্রহালয় এমন একটি জাদুঘর, যেখানে ৭০ হাজারেরও বেশি জিনিস সংরক্ষণ করা হয়েছে।”
যুব সঙ্গমের প্রথম রাউন্ডে, প্রায় ১,২০০ যুবক দেশের ২২ টি রাজ্য সফর করেছেন।
ভারতে বড় সংখ্যায় বিদেশি লগ্নি আসছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বললেন, ‘অনেক কোম্পানির বড় বড় সিইওরা ভারতে ব্যাগ প্যাকারের মতো সময় কাটাচ্ছেন।
সাম্প্রতিক জাপান সফরের প্রসঙ্গ তুললেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তিনি জানিয়েছেন, হিরোশিমায় গিয়ে তিনি আবেগমথিত হয়ে পড়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “কিছুদিন আগে আমি জাপানের হিরোশিমায় ছিলাম। সেখানে হিরোশিমা পিস মেমোরিয়াল মিউজিয়াম দেখার সুযোগ পেয়েছিলাম। এটি একটা আবেগপূর্ণ অভিজ্ঞতা। ইতিহাস আগামী প্রজন্মকে অনেক সাহায্য করে।”
‘যুব সঙ্গম’ উদ্যোগের বিষয়ে দুই তরুণের সঙ্গে কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। এই দুই তরুণ ছিলেন অরুণাচল প্রদেশ ও বিহার থেকে। প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “সম্প্রতি, আমরা মন কি বাতে কাশি তামিল সঙ্গম সম্পর্কে কথা বলেছি। সৌরাষ্ট্র তামিল সঙ্গম সম্পর্কে কথা বলেছি। কিছুদিন আগে বারাণসীতেও কাশী তেলেগু সঙ্গম অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এক ভারতের মহান চেতনাকে শক্তি দিতে দেশে এমনই এক অনন্য প্রচেষ্টা করা হয়েছে। এটি যুব সঙ্গমের প্রচেষ্টা,”
যখন মন কি বাত যখন সম্প্রচার হয়, তখন বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময় থাকে। কোথাও রাত, কোথাও সন্ধ্যা। তাও বহু লোক সময় করে এই অনুষ্ঠান শোনেন।
‘মন কি বাত’-এর এই পর্বটি দ্বিতীয় সেঞ্চুরির শুরু। গত মাসে আমরা সবাই এর বিশেষ সেঞ্চুরি উদযাপন করেছি। আপনাদের অংশগ্রহণ এই কর্মসূচির সবচেয়ে বড় শক্তি।